কিভাবে একটি জাদুঘরে বস্তু সংগ্রহ করা হয়?
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বিভিন্ন জাদুঘরের উদ্দেশ্যও বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। জাদুঘরের প্রধান উদ্দেশ্য ও কার্যাবলিগুলি হল—
(ক) সংগ্রহ:
জাদুঘরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ও কাজ হল দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন দুর্লভ ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ খুঁজে বের করা এবং সেগুলি সংগ্রহ করা। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি সংগ্রহ করে ইতিহাস রচনার দরজা খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(খ) সংরক্ষণ:
আধুনিক জাদুঘরগুলিতে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক উপাদান সংরক্ষিত থাকে। জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন সংরক্ষিত জিনিসপত্র দীর্ঘস্থায়ী করতে বৈজ্ঞানিক সংরক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
(গ) প্রদর্শন:
জাদুঘর দুর্লভ ঐতিহাসিক বস্তুসামগ্রী সাধারণ দর্শক, পাঠক, গবেষক প্রভৃতি সব ধরনের মানুষের প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে উন্মুক্ত করে দেয়। জাদুঘরে সংরক্ষিত সামগ্রীগুলি জনসাধারণকে প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ‘ডিসপ্লে কেস’-এ সাজিয়ে রাখা হয়।
(ঘ) গবেষণার কাজ
যে-কোনো মানুষের সংগ্রহ করা ঐতিহাসিক নিদর্শনই জাদুঘরে সংরক্ষিত হতে পারে। সেসব নিদর্শনগুলির প্রকৃত ইতিহাস কী তা নিয়ে যথেষ্ট গবেষণার সুযোগ করে দেওয়া জাদুঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ও কাজ। গবেষকদের বৃত্তি প্রদান করে জাদুঘরগুলি গবেষকদের কাজে উৎসাহ দেয়।
জ্ঞানের প্রসার ঘটানো
জাদুঘরের একটি প্রাথমিক উদ্দেশ্য ও কাজ হল সংগ্রহশালার বস্তুসামগ্রীর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। পাঠ্য বইয়ের পাতায় বা দৈনন্দিন পড়াশোনায় পাঠকগণ যেসব ঐতিহাসিক বিষয় পড়ে থাকেন সেসব বিষয়ের ঐতিহাসিক নিদর্শন জাদুঘরে চোখের সামনে দেখে পাঠকের মনে বিষয়টি সম্পর্কে আরও কৌতূহল ও আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়।
(চ) আনন্দদান
জাদুঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সাধারণ দর্শকদের আনন্দদান করা। দর্শকরা সর্বদা গবেষকের দৃষ্টি নিয়ে জাদুঘরে আসবে এমন কোনো কথা নেই। বরং জাদুঘরে গবেষকের তুলনায় সাধারণ দর্শকদের সংখ্যাই বেশি হয়। এরুপ দর্শকদের কাছে জাদুঘর হল হালকা জ্ঞান সংগ্রহের মাধ্যমে কিছু আনন্দলাভের স্থান।