আদর্শ শিক্ষকের কর্তব্যগুলি আলোচনা করো।

তাই আদর্শ শিক্ষকের দায়িত্ব কর্তব্যকে নিচের কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বর্ণনা করা যায়। যেমন-

(১) শিক্ষকের পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্য

(২) সমাজ সংস্কারক হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য

(৩) সমাজে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য

() শিক্ষকের পেশাগত দায়িত্ব কর্তব্য (Professional Duties and Responsibilities of Teachers)

শিক্ষকের মূল কাজ হলো তার পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা। পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে তাঁকে কঠিন, জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ মহান দায়িত্ব পালন করতে হয়।একজন আদর্শ শিক্ষকের পেশাগত দায়িত্ব ও কর্তব্যের কয়েকটি দিক নিচে উল্লেখ করা হলো:

(ক) শিখন-শেখানো কার্যাবলি পরিচালনা: আদর্শ শিক্ষকের অন্যতম প্রধান পেশাগত দায়িত্ব হল নিয়মিত যথোপযুক্তপদ্ধতি অনুসরণ করেশ্রেণি শিখন-শেখানো কার্য সম্পন্ন করা।এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটানো শিক্ষকের পেশাগত দায়িত্বভুক্ত।এজন্য তিনি পাঠ পরিকল্পনা ক্সতরি করে বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতা অর্জন করানোর লক্ষ্যে পাঠ পরিচালনা করবেন।

(খ) শিক্ষার্থীর শিখন মূল্যায়ন সম্পন্নকরণ: শিক্ষকের আধুনিক পেশাগত দায়িত্ব কর্তব্যের মাঝে অন্যতম হল শিক্ষার্থীদের শিখন নিয়মিত মূল্যায়নকরে ফলাবর্তন প্রদান করা। এর ফলে শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা/সমস্যা চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে শিখন-শেখানো কাজের মান উন্নয়ন হবে।

(গ) পেশাগত মূল্যবোধ ও নৈতিকতা অনুশীলন: শিক্ষক সকল শিক্ষার্থীর সঙ্গে ব্যবহারে সমতাবিধান, একীভূতকরণ ও ন্যায়পরায়ণতা নিশ্চিত করবেন।শিক্ষকের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব সময়মতো এবং নীতি মেনে পালন করবেন।

(ঘ) পেশাগত সম্পর্ক স্থাপন: শিক্ষক পেশাগত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, সহকর্মী, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং অভিভাবকদের সাথে পেশাগত সম্পর্ক স্থাপন করবেন।একইসাথে তিনি শিক্ষার্থীর ব্যাপারে খোজঁ-খবর নেয়ার পাশাপাশি তাদেরকে সহযোগিতা ও সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন।

(ঙ) পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের অঙ্গীকার: শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও প্রতিফলনমূলকঅনুশীলনের মাধ্যমে সবসময় তার নিজের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে অঙ্গীকার প্রদর্শন করবেন এবং সচেষ্ট থাকবেন।

(২)  সমাজসংস্কারকহিসেবেদায়িত্বওকর্তব্য:

একজন আদর্শ শিক্ষক একজন আদর্শ সমাজ সংস্কারক।তিনি তাঁর শিক্ষণের মাধ্যমে সমাজের কুসংস্কারর, গোমড়ামি, এবং অন্ধবিশ্বাস দূরীভূত করে থাকেন।তার আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়ে আজকের শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে সমাজের কর্ণধার হয়ে সমাজ সংস্কার করে।সেদিক হতে বলা যায়, আদর্শ শিক্ষকের সমাজ সংস্কারক হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে।এক্ষেত্রে শিক্ষক বহুমূখী ভূমিকা পালন করে থাকেন, যেমন- সমাজ থেকে নিরক্ষরতা ও কুসংস্কার দূরীকরণ, মানুষের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা জাগ্রতকরণ ইত্যাদি।

(৩)  সমাজে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য:

শিক্ষক সমাজেরই একজন প্রভাবশালী সচেতন প্রতিনিধি।সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, সামাজিক কর্মকান্ডে নেতৃত্বদান, সংগঠিত মনোভাব সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রদান আদর্শ শিক্ষকের নৈতিক দায়িত্ব।আদর্শ শিক্ষককে সমাজ অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বহিসেবে সামাজিকতা, জনসচেতনতা সৃষ্টি, সামাজিক বিভিন্ন কাজে নেতৃত্বদান, জনমত গঠন, করা।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, সামাজিক বিবাদ-মীমাংসা, অপরাধপ্রবণতা রোধে করণীয় নির্ধারণ এবং সামগ্রিক উন্নয়ন অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি ভূমিকা পালন করতে হয়।

সর্বোপরি একজন আদর্শ শিক্ষক এমন গুণের অধিকারী হবেন, যা তাকে তার দায়িত্ব ও ভমিকাূ পালনের মধ্য দিয়ে অন্যান্য পেশা থেকে অনন্য করে তুলবে ।একজন আদর্শ শিক্ষক পেশাগত মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করবেন।একজন শিক্ষক নিজের পেশার প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন।, সৎ ও দায়িত্ব সচেতন হবেন।তিনি অত্যন্ত দক্ষ ও কুশলী ভূমিকা রাখবেন। শিক্ষক তার দক্ষতা এবং কৌশল এমনভাবে প্রয়োগ করবেন যেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানা এবং ভাবার জন্য আগ্রহ তৈরি হয়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading