ঔপনিবেশিক ভারতে উত্তরবঙ্গের চা-বাগিচা শিল্পের উৎপত্তি ও বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই অঞ্চলে চা-শ্রমিক হিসেবে আগত অভিবাসীদের সামাজিক ও আর্থিক পরিস্থিতির প্রশ্নটি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কারণ এই অভিবাসী চা-শ্রমিকরাই ছিল [11:19 am, 03/12/2023] এখন PAN CARD বানান 5 মিনিটে: উত্তরবঙ্গের চা-শিল্পের উন্নতি ও বিকাশের মূল কারিগর। ব্রিটিশ চা-উৎপাদকগোষ্ঠী ওই সকল অভিবাসীদের ছোটোনাগপুর ও অবিভক্ত বাংলার অন্যান্য অঞ্চল থেকে একরকম জোর করে কৃষক থেকে চা শ্রমিকে রূপান্তরিত করেছিল। স্বাভাবিকভাবেই ব্রিটিশ চা-উৎপাদক গোষ্ঠীর এইসকল অভিবাসীদের প্রতি কোনোরকম সহানুভূতি ছিল না। কাজেই চা-বাগিচা শিল্পের এই অভিবাসীরা হয়ে ওঠে শোষক শ্রেণি। অভিবাসীদের ভাষা, কৃষ্টি, রুচি এখানকার স্থানীয়দের থেকে ছিল সম্পূর্ণ পৃথক, ফলে স্বাভাবিকভাবেই সামাজিকভাবে তারা এরকম বিচ্ছিন্নই ছিল। তার ওপর তারা বেশিরভাগই অশিক্ষিত হওয়ায় তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন ছিল না। তারা নিজেদের সীমিত গন্ডির মধ্যেই থাকতে পছন্দ করত এবং নিজেদের জীবনধারণের জন্য যতটুকু কৃষির প্রয়োজন হত ততটুকুই তারা উৎপাদন করত এবং চা বাগানের শ্রমিক হিসেবে তারা যে মজুরি পেত তা দিয়ে তাদের দিন গুজরান হত না। এককথায় চা-শ্রমিকদের জীবনধারণের বুনিয়াদি চাহিদাগুলি, যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, তাদের মজুরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সবকিছুই ছিল অবহেলিত। তারা কেবলমাত্র চা-শিল্পের দাস হিসেবে জীবনধারণ করত। তবে স্বাধীনোত্ত রকালে ব্রিটিশ চা-উৎপাদকগোষ্ঠীর স্থানে ভারতীয়রা চা উৎপাদনকারীর ভূমিকা নিতে শুরু করলে অভিবাসীদের জীবনযাত্রারও খানিকটা মানোন্নয়ন ঘটে।