বুনিয়াদি পর্যায়ের শিক্ষা শেষ হলে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা হবে গ্রামীণ মহাবিদ্যালয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঐসকল বিদ্যালয়গুলিতে পাঠক্রমে তত্ত্বগত বৌদ্ধিক জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক জ্ঞানার্জনের সুযোগ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রামীণ শিল্প , অর্থনীতি , সংস্কৃতি – প্রভৃতি বিষয়ে গবেষণারও সুযোগ থাকবে।
কর্মসূচির বিষয়ে সুপারিশ :
কমিশনে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য যেসব কর্মসূচির বিষয়ে সুপারিশ করা হয় , সেগুলির গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি দিক হল –
(i) অনুমোদনের ব্যবস্থা – বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী অঞ্চলগুলিতে অবস্থিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়গুলিকে অনুমোদন দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
(ii) আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর – মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়গুলিকে আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
(iii) পাঠক্রমে গ্রামীণ বিষয় সংযোজন – গ্রামীণ সমাজ সংস্কৃতি , শিল্প ও অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয়গুলিকে পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করা।
(iv) গ্রাম্যজীবন সম্পর্কে গবেষণা – গ্রাম্যজীবনের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা।
(v) তথ্য সংগ্রহ – গ্রাম্যজীবনের বিভিন্ন দিকের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে তথ্যসংগ্রহের ব্যবস্থা করা।
গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী অবস্থা :
1948 – 49 খ্রিস্টাব্দের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের প্রস্তাব সরকার সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করেন নি। তাই গ্রামীণ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ভারত সরকারকে পরামর্শ প্রদানের জন্য 1956 খ্রিস্টাব্দে National Council of Rural Higher Education ( NCRHE ) গঠন করা হয়। এই কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী ভারতের বিভিন্ন স্থানে 14 – 15 টি Rural Institute গঠন করা হয়। আমাদের রাজ্যে বোলপুরের কাছে শ্রীনিকেতনে এইরূপ একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। NCRHE – র সুপারিশে গ্রামীণ অর্থনীতি , সমবায় , সমাজবিজ্ঞান ও সমষ্টি উন্নয়ন বিষয়ে পঠন – পাঠন ও ডিগ্রি প্রদানের ব্যবস্থা করার কথা বলা হলেও , বাস্তবে মাত্র কয়েকটি বিষয়ে ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স চালু হয়। যেমন –
(i) গ্রামীণ বিজ্ঞানে সার্টিফিকেট কোর্স – 2 বছর।
(ii) কৃষিবিজ্ঞানে সার্টিফিকেট কোর্স – 2 বছর।
(iii) সিভিল ও রুরাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সার্টিফিকেট কোর্স – 3 বছর – ইত্যাদি।