পাঠ পরিকল্পনার ধারণা:
আমরা যে কোনো কাজই করি না কেন সর্বাগ্রে প্রয়োজন পরিকল্পনা। পরিকল্পনা একটি কৌশল মাত্র। অর্থাৎ আমাদের প্রত্যেকের প্রতিটি কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা কিছু পদ্ধতি বা কৌশল গ্রহণ করি। এই পদ্ধতি বা কৌশল গ্রহণই হচ্ছে পরিকল্পনা।
দৈনন্দিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান প্রক্রিয়াকে ফলপ্রসূ করার জন্য আমরা আমাদের চিন্তা-চেতনা থেকে যে কৌশল বা পদ্ধতি গ্রহণ করি তাই পাঠ পরিকল্পনা, যা কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য কিছু নির্ধারিত কর্মকৌশল। পরিকল্পনাবিহীন কোন কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। যদি পরিকল্পনা গ্রহণ না করা হয় তাহলে কাজটি অবশ্যই এলোমেলোভাবে সম্পন্ন হবে। কখন, কোথায়, কিভাবে, কি উপায়ে, কি কৌশলে উপস্থাপন করে শিক্ষক একটি ফলপ্রসূ সেশন পরিচালনা করবেন, তার জন্যই প্রয়োজন শিক্ষকের পাঠ পরিকল্পনা।
পাঠ পরিকল্পনার ফল:
• পাঠদানের যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়;
• পাঠদান কৌশল নির্ধারণ করা হয়;
• শিক্ষকের দক্ষতা ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায়;
• শিক্ষকের মনোবল বৃদ্ধি করে;
• পাঠদান আকর্ষণীয়, ফলপ্রসূ ও প্রাসঙ্গিক হয়;
• নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাঠদান সম্পন্ন করা যায়;
• সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠ পৌঁছানো যায়;
• ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা যায়;
• পাঠের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়;
• শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়;
• সঠিক উপকরণ ব্যবহারে যত্নবান হওয়া যায়;
• পাঠদান পদ্ধতি বিষয় কেন্দ্রিক হয়।
পাঠ পরিকল্পনার উপাদান ও ধাপসমূহ:
১. পরিচিতি;
২. শুভেচ্ছা বিনিময়:
৩. শ্রেণিবিন্যাস;
৪. হাজিরা
৫. শিক্ষা উপকরণ;
৬. বাড়ির কাজ জমা নেয়া;
৭. পূর্ব জ্ঞান যাচাই;
৮. পাঠ ঘোষণা/শিরোনাম;
৯. শিখনফল;
১০. পাঠ উপস্থাপন;
১১. মূল্যায়ন;
১২. বাড়ির কাজ দেয়া;
১৩. পাঠ সমাপ্তি।
শিক্ষা বিজ্ঞানী Hurbertপাঁচটি ধাপ উল্লেখ করলেও প্রয়োগের কারণে নিম্নোক্তগুলো ব্যাপক পরিচিত।
পাঠ পরিকল্পনার তিনটি ধাপ:
১. প্রস্তুতি;
২. উপস্থাপন;
৩. মূল্যায়ন ।
পাঠ পরিকল্পনা প্রণয়নের শর্তসমূহ:
• পাঠ পরিকল্পনা শ্রেণি উপযোগী হতে হবে;
• সময়ের দিকে লক্ষ্য রেখে পাঠ পরিকল্পনা করতে হবে;
• উপকরণসমূহ বিষয় প্রাসঙ্গিক ও শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় হতে হবে;
• বিভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহার, প্রশ্ন প্রণয়ন, উদাহরণ ইত্যাদির ব্যবহার পাঠ পরিকল্পনায় থাকতে হবে; • পাঠ পরিকল্পনা প্রণয়ন হবে অংশগ্রহণমূলক