পুণ্ড্রবর্ধন/পুণ্ড্রবর্ধন ভুক্তির ওপর একটি :
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে অবিভক্ত বাংলার উত্তরাংশ ‘পুণ্ড্রবর্ধন’ নামে পরিচিত ছিল। এই অঞ্চল পশ্চিমে মহানন্দা এবং পূর্বে করতোয়া নদী দ্বারা বেষ্টিত ছিল। ‘আত্রেয় ব্রাহ্মণ’ (7 century, BC)-এ প্রথম ‘পুণ্ড্র’ শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। এখানে ‘পুণ্ড্র’ শব্দটি জনজাতি অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। তবে প্রাচীনকালে জাতি এবং ভৌগোলিক ক্ষেত্র উভয় অর্থেই ‘পুণ্ড্র’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। ‘পুণ্ড্র’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল- ইক্ষু/ আখ। ‘অমরকোষ’ গ্রন্থে পুণ্ড্র শব্দটির দ্বারা আখের বিভিন্ন প্রজাতিকে বোঝানো হয়েছে। বৌদ্ধগ্রন্থ ‘দিব্যবদান’-এ প্রথম ‘নগর’ অর্থে পুণ্ড্র শব্দের প্রয়োগ হতে দেখা যায়। মহাস্থানগড় শিলালেখতে পুণ্ড্রবর্ধনকে মৌর্যদের সাম্রাজ্যভুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাহিত্যিক এবং প্রত্নতত্ত্বের সাক্ষ্য অনুযায়ী, অবিভক্ত বাংলার রাজশাহি, বগুরা এবং অবিভক্ত দিনাজপুর পুণ্ড্রবর্ধনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ধনাইদহ, বৈগ্রাম, দামোদরপুর ইত্যাদি তাম্রশাসন থেকে জানা যায়, পুণ্ড্রবর্ধন গুপ্ত সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল এবং গুপ্ত সাম্রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুক্তিতে পরিণত হয়েছিল। হিউয়েন সাং-এর রচনায় আমরা পুণ্ড্রবর্ধনের উল্লেখ পাই। তিনি পুণ্ড্রবর্ধন এবং করতোয়া নদী পার করে কামরূপ গমন করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ পাল এবং সেন যুগে পুণ্ড্রবর্ধন ভুক্তির রাজ্যসীমা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল।