প্রবাদে প্রতিফলিত সমাজচিত্র:
লােকসমাজের সঙ্গে নিবিড় সংযােগই প্রবাদের প্রাণ। তাই একদিকে দেশের ভূপ্রকৃতি, অন্যদিকে সমাজের নানাস্তরের মানুষের জীবনযাত্রা, তাদের সংস্কার, বিশ্বাস এবং সংস্কৃতির কাহিনি বাংলা প্রবাদে প্রকাশিত হয়েছে।
পশুপাখি ও ভূপ্রকৃতি: কুমির, বাঘ, শকুন, বিড়াল, কাক ইত্যাদি পশুপাখির কথা যেমন বাংলা প্রবাদে আছে তেমনই নদী, খাল, বিল নিয়ে বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতির একটি ছবিও বাংলা প্রবাদগুলিতে পাওয়া যায়। যেমন- ‘জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ’।
পেশা-পরিচয়: তাঁতি, বােষ্টম, বামুন, কৃষক, ফকির ইত্যাদি নানা পেশার মানুষের কথা প্রবাদে পাওয়া যায়। যেমন- ‘খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে/কাল হল এঁড়ে গােরু কিনে’।
স্বাস্থ্যবিধি: স্বাস্থ্যবিধির প্রকাশও ঘটেছে বাংলা প্রবাদগুলিতে। যেমন—’সকালে শুয়ে সকালে উঠে, তার কড়ি না বৈদ্যে লুটে’।
আবহাওয়া: আবহাওয়া সম্পর্কে ধারণাও প্রবাদে পাওয়া যায়। যেমন -‘পূর্ব আষাঢ় দখিনা বায়, সেই বৎসর বন্যা হয়’।
সমাজ-মনস্তত্ব: সামাজিক স্বার্থপরতার ছবি বাংলা প্রবাদে রয়েছে- ‘কাজের বেলায় কাজি, কাজ ফুরােলে পাজি’।
আচরণবিধি: ব্যক্তিগত এবং সামাজিক আচরণবিধির ইঙ্গিতও প্রবাদে দেওয়া হয়েছে। যেমন—‘অতি চালাকের গলায় দড়ি’ কিংবা ‘অতি দর্পে হত লঙ্কা’ ইত্যাদি।