প্রাচীন ভারতের প্রস্তর চিত্র ইতিহাসের উপাদান হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মূলত প্রাগৈতিহাসিক যুগের ইতিহাস জানতে প্রস্তর চিত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রস্তর যুগের আদিম মানুষ পশুর হাড় ও শিং দিয়ে গুহার দেওয়ালে ছবি আঁকতে শিখেছিল। আদিম মানুষের পশুচিত্রের প্রধান বিষয় ছিল শিকার, এ ছাড়া বিভিন্ন জ্যামিতিক নকশা খোদাই করা বেশ কিছু প্রস্তর চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রাচীন ভারতের রাজস্থানের সিরোহী জেলার চন্দ্রবতী এবং মধ্যপ্রদেশের ভোপালের নিকট ভীমবেটকায় বেশ কিছু প্রস্তর চিত্র পাওয়া গেছে। এই সমস্ত চিত্রে দেখা যায় শিকারিরা তিরধনুক নিয়ে পশুশিকার করছে। ভীমবেটকায় ময়ূরীর চিত্র পাওয়া যায়, যা শিল্পদক্ষতার এক দারুণ নিদর্শন। এইসব চিত্রে হলুদ, সবুজ, লাল প্রভৃতি রঙের ব্যবহার দেখা যায়। পরিশেষে একটি কথা বলা যায়, প্রস্তর যুগে শিল্পকলার বিস্তৃত বিশ্লেষণ এখনও হয়নি।
প্রস্তর যুগের গুহাচিত্রের যে ক-টি নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-ভীমবেটকা গুহাচিত্র। মধ্যপ্রদেশের ভীমবেটকায় এটি অবস্থিত। ভারতের সবথেকে প্রাচীন গুহাচিত্র হল ভীমবেটকা গুহাচিত্র।
ভীমবেটকা গুহাতে যে সমস্ত চিত্রগুলি অঙ্কিত হয়েছে সেগুলি যে-কোনো গুহাচিত্রের চেয়ে বেশ সমৃদ্ধ। এই চিত্রগুলিতে মানুষের শিকারের দৃশ্য এবং ধর্মীয় বেশ কিছু প্রতীক |
প্রাচীন প্রস্তর যুগ, মধ্যপ্রস্তর যুগ কেন্দ্র, হাতিয়ার, প্রযুক্তি এবং বৈশিষ্ট্য:
চিত্রিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, এই গুহাচিত্রে মানুষের দলবদ্ধতার ছবিই বেশি, পশুপাখির ছবি যথেষ্ট কম। বিভিন্ন পশুর ছবিও চিত্রিত হয়েছে ভীমবেটকায়। পশুপাখির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল-সিংহ, বাঘ, চিতা, গন্ডার, যাঁড়, বাইসন ইত্যাদি। প্রাচীন ভারতের প্রস্তর যুগের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ভীমবেটকা গুহাচিত্র ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে। 2003 সালে UNESCO ভীমবেটকাকে ‘World Heritage Site হিসেবে চিহ্নিত করেছে।