বিভাব, অনুভাব ও সঞ্চারীভাবের সংযোগে কীভাবে রসনিষ্পত্তি ঘটে-তা আলোচনা করো!

বিভাব, অনুভাব ও সঞ্চারীভাবের সংযোগে কীভাবে রসনিষ্পত্তি-

রসতত্ত্বে, বিভাব, অনুভাব, এবং সঞ্চারীভাব এই তিনটি উপাদান একত্রিত হয়ে রসনিষ্পত্তি ঘটে। এই প্রক্রিয়া নাটক, কাব্য, বা যেকোনো শিল্পের মাধ্যমে একজন দর্শক বা পাঠকের মনে রসের অনুভূতি জাগায়। এর মধ্যে:

  1. বিভাব: বিভাব হল সেই উপাদান যা একটি নির্দিষ্ট রসের সৃষ্টি করতে সহায়ক হয়। এটি প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত—আলম্বন বিভাব এবং উদীপন বিভাব। আলম্বন বিভাব হল সেই চরিত্র বা বস্তু যা অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু, যেমন প্রেমে প্রেমিক-প্রেমিকা। উদীপন বিভাব হল সেই পরিবেশ বা পরিস্থিতি যা অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলে, যেমন পূর্ণিমার চাঁদ, ফুলের গন্ধ ইত্যাদি।
  2. অনুভাব: অনুভাব হল সেই বাহ্যিক প্রকাশ যা বিভাবের প্রভাবের কারণে ঘটে। এই প্রকাশের মাধ্যমে চরিত্রের অভ্যন্তরীণ ভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে, যেমন মুখের ভাব, অঙ্গভঙ্গি, অথবা কোনো নির্দিষ্ট ক্রিয়া।
  3. সঞ্চারীভাব: সঞ্চারীভাব হল ক্ষণস্থায়ী বা অস্থায়ী অনুভূতি যা মূল রসের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং তাকে আরও গভীর করে। এগুলি মূলত সতেরোটি যেমন আশ্চর্য, লজ্জা, ক্রোধ, দুঃখ, আনন্দ ইত্যাদি।

রসনিষ্পত্তির প্রক্রিয়া

বিভাব, অনুভাব, এবং সঞ্চারীভাবের সমন্বয়ে রসনিষ্পত্তি ঘটে। কোনো নাটক বা কাব্যে যখন বিভাবের মাধ্যমে অনুভূতি জাগানো হয় এবং অনুভাবের মাধ্যমে সেটির প্রকাশ ঘটে, তখন সঞ্চারীভাবগুলো এই অনুভূতিকে আরও গভীর ও সুগঠিত করে তোলে। এই তিনটির মিলনে দর্শক বা পাঠকের মনে যে অভিজ্ঞতা তৈরি হয়, সেটাই রস। যেমন, শৃঙ্গার রসের ক্ষেত্রে প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে আলম্বন বিভাব, উদীপন বিভাব, প্রেমিকের কথা বলার ধরণ বা চোখের চাহনি অনুভাব হিসেবে কাজ করে এবং সঞ্চারীভাবে আনন্দ, লজ্জা, উদ্বেগ ইত্যাদি রসনিষ্পত্তি ঘটায়।

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading