রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যের পঞ্চম সংখ্যক পত্রের নাম “শূর্পণখা”।
এই পত্রটি একটি নাট্যরূপ। এটি মূলত শূর্পণখা চরিত্রকে কেন্দ্র করে রচিত, যিনি রামায়ণের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। রবীন্দ্রনাথ এখানে শূর্পণখার দুঃখ, ক্ষোভ এবং মানসিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল চিত্র তৈরি করেছেন।
শূর্পণখা চরিত্রের সংক্ষিপ্ত আলোচনা:
শূর্পণখা, রাবণের বোন, রামায়ণে একদিকে যেমন তার রূপ, সৌন্দর্য এবং কামনার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত, তেমনি অন্যদিকে তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং রাগী চরিত্র। রবীন্দ্রনাথ তাঁর “শূর্পণখা“ পত্রে এই চরিত্রের গভীরতা এবং তার মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলি তুলে ধরেছেন।
এখানে শূর্পণখা একটি ব্যথিত নারী চরিত্র হিসেবে উপস্থিত হন, যিনি প্রথমে রামকে এবং পরে লক্ষ্মণকে প্রেমের জন্য প্রস্তাব দেন। তবে তার প্রেমের আবেদন উপেক্ষিত হয়ে যায় এবং শেষে রাম ও লক্ষ্মণের হাতে আঘাত পেয়ে তিনি বিকৃত হয়ে যান। রবীন্দ্রনাথ এই চরিত্রের মানসিক যন্ত্রণাকে গভীরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যেখানে প্রেম ও অপমানের দ্বন্দ্ব তাকে এক তিক্ত পথে নিয়ে যায়।
এই পত্রে শূর্পণখা একটি বিপর্যস্ত, ক্ষিপ্ত এবং হতাশ নারী হিসেবে চিত্রিত, যিনি সমাজের রক্ষণশীলতা ও পুরুষের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চেষ্টা করেন। তার চরিত্রের দুঃখ এবং তার কাছে অন্যরা যেভাবে তাকে উপেক্ষা করেছে, তা রচনা জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
“শূর্পণখা“ পত্রটি নারীর মানসিক দ্বন্দ্ব এবং সমাজের প্রতি তার বিরুদ্ধতা তুলে ধরে।