বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিবন্ধী বলতে কি বোঝানো হয়?
বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিবন্ধী বলতে এমন ব্যক্তিদের বোঝায় যাদের মানসিক দক্ষতা স্বাভাবিকের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম থাকে এবং এ কারণে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনে ও সামাজিক ক্রিয়াকলাপে উল্লেখযোগ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:
বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিবন্ধী বৈশিষ্ট্য:
১. বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতার অভাব:
বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিবন্ধীদের আইকিউ সাধারণত ৭০ বা তার কম হয়। এর ফলে তাদের শিক্ষণ ক্ষমতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, এবং নতুন তথ্য গ্রহণ ও প্রয়োগের ক্ষমতা কম থাকে।
২. অভিযোজনমূলক দক্ষতার সীমাবদ্ধতা
অভিযোজনমূলক দক্ষতা বলতে এমন দক্ষতাগুলো বোঝানো হয় যা ব্যক্তি নিজের পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে ব্যবহার করে। এর মধ্যে নিম্নলিখিত দিকগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকে:
২.১ সামাজিক দক্ষতা
- অন্যদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং বজায় রাখা
- যোগাযোগের দক্ষতা
- সামাজিক নিয়ম মেনে চলা
২.২ প্রায়োগিক দক্ষতা
- দৈনন্দিন জীবনযাপনের কার্যক্রম যেমন খাওয়া, পোশাক পরা, নিজের যত্ন নেওয়া
- কর্মসংস্থানমূলক কাজ করা
- আর্থিক ব্যবস্থাপনা
২.৩ ধারণাগত দক্ষতা
- ভাষার দক্ষতা
- লেখাপড়া এবং গণিতের প্রাথমিক জ্ঞান
- স্মৃতি এবং তথ্যের প্রয়োগ
৩. প্রাথমিক আবির্ভাব
বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিতা সাধারণত শিশু বয়সে বা কিশোর বয়সে আবির্ভূত হয়। এটি কোনও ব্যক্তির পূর্ণ বয়স্ক বয়সে আচমকা উদ্ভূত হয় না।
৪. কারণসমূহ
বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিতার অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন:
- জেনেটিক কারণ (ডাউন সিনড্রোম, ফ্রেজাইল এক্স সিনড্রোম)
- গর্ভাবস্থায় সংক্রমণ বা অপুষ্টি
- জন্মের সময় আঘাত
- জন্মের পর মস্তিষ্কে আঘাত বা অসুস্থতা
৫. নির্ণয় এবং সহায়তা
বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিতার নির্ণয় করতে মানসিক দক্ষতার পরীক্ষার পাশাপাশি অভিযোজনমূলক দক্ষতার মূল্যায়ন করা হয়। এর পরে, বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা, চিকিৎসা সহায়তা, এবং সামাজিক সহায়তার মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে সাহায্য করা হয়।
বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজের সমান সুযোগ এবং সহায়তা পাওয়ার অধিকার রাখে, এবং তাদের মানসিক ও সামাজিক উন্নতির জন্য সমাজের সকলের সমর্থন প্রয়োজন।