মহাস্থানগড় সম্পর্কে টীকা :
বর্তমান বাংলাদেশের বগুড়া জেলার অন্তর্গত মহাস্থানগড় প্রাচীন ভারতের ইতিহাস তথা প্রাচীন উত্তরবঙ্গের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে নিয়েছে। প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী করতোয়া নদী মহাস্থানগড়ের ধ্বংসাবশেষের পূর্বদিক দিয়ে প্রবহমান। 1928-29 সালে KN Dikshit-এর তত্ত্বাবধানে সর্বপ্রথম এই অঞ্চলে খননকার্য চালানো হয়। প্রথম পর্বে, জাহাজঘাটা, মুনির গাঁও, বৈরাগীর ভিটা প্রভৃতি স্থানে খননকার্য চালানো হয়। 1934-36 সালে পুনরায় বৈরাগীর ভিটা, গোবিন্দ ভিটা অঞ্চলে খননকার্য চালানো হয়। 1960-61 সালে বাংলাদেশের ‘Department of Archaeology’-র তত্ত্বাবধানে মহাস্থানগড়ে খননকার্য চালানো হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননে বহু সংখ্যক Punches marked coins এবং তাম্রমুদ্রা আবিষ্কৃত হয়। মহাস্থানগড় থেকে প্রাপ্ত বহু সামগ্রী হল মৌর্য যুগের। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল একটি মৌর্যযুগীয় সিল। ছ-টি পত্তি খোদিত এই ভগ্ন সিলটি ব্রাহ্মীলিপিতে লিখিত। সম্রাট অশোকের আমলে সহগৌড়া শিলালেখ এবং মহাস্থানগড় শিলালেখ থেকে দুর্ভিক্ষের সময়ে রাষ্ট্রীয় তরফে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা এবং ত্রাণ বণ্টনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও মহাস্থানগর থেকে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক-এর মধ্যে বহু সংখ্যক Northern Black Polished Ware Culture (NBPW)-এর নিদর্শন ও পাওয়া যায়।