যোগ শিক্ষা:
যোগ শিক্ষা হল স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানের শিক্ষাগত অনুষঙ্গ । এই শিক্ষা ছাত্রদের তাদের শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক অনুষদের একীকরণের জন্য শারীরিক এবং মানসিকভাবে দেওয়া যাতে ছাত্ররা যোগ এবং ধ্যানের একটি শান্ত মনের সাথে সমাজের সাথে একীভূত হতে পারে।
যোগ শিক্ষার বৈশিষ্ট্য:
1.যোগব্যায়াম হল একটি প্রাচীন অনুশীলন যাতে শারীরিক ভঙ্গি
2.একাগ্রতা এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস জড়িত।
3.একটি নিয়মিত যোগ অনুশীলন ধৈর্য, শক্তি, প্রশান্তি, নমনীয়তা এবং সুস্থতার প্রচার করতে পারে। যোগব্যায়াম এখন সারা বিশ্বে একটি জনপ্রিয় ব্যায়াম।
যোগ শিক্ষার লক্ষ্য:
(1) জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া (Life – Long Process ) : শিক্ষা হল একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া অর্থাৎ, জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত চলতে থাকে। জন্মের পর থেকে নিয়ন্ত্রিত (Formal), অনিয়ন্ত্রিত (informal) এবং প্রথামুক্ত (non – formal) শিক্ষার প্রতিষ্ঠান থেকে শিশু অভিজ্ঞতা লাভ করে।
(2) গতিশীল প্রক্রিয়া (Dynamic Process) : শিক্ষা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। শিক্ষার প্রকৃতি সময়, স্থান এবং সমাজের চাহিদা অনুযায়ী প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়ে চলেছে।
(3) ব্যক্তির বিকাশ (Individual Development) : শিক্ষা হল ব্যক্তি বিকাশের প্রক্রিয়া। শিক্ষা ব্যক্তির সার্বিক অর্থাৎ দৈহিক, মানসিক, প্রক্ষোভিক, সামাজিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক, সৌন্দর্যবোধ এবং অর্থনৈতিক বিকাশের প্রক্রিয়া।
(4) শিশুর জন্মগত ক্ষমতার বিকাশ (Develops child’s innate power) : শিক্ষা শিশুর জন্মগত ক্ষমতা বিকাশের প্রক্রিয়া। এই ক্ষমতার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে বাহ্যিক পরিবেশের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা। শিক্ষাবিদ পেস্তালোৎসি এবং ফ্রয়েবেল শিক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসাবে শিশুর জন্মগত ক্ষমতা বিকাশের কথা বলেছেন।
(6) আচরণের পুনর্গঠন (Modifies behaviour) : শিক্ষা শিশুর আচরণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া। শিক্ষা হল এমন এক বিশেষ প্রক্রিয়া যার মধ্যে এবং যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, চরিত্র এবং আচরণের পরিবর্তন ঘটে।
(7) ত্রিমেরু প্রক্রিয়া (Tripolar Process) : শিক্ষা হল ত্রিমেরু প্রক্রিয়া। ত্রিমেরু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সঠিক ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে। J.E. Adamson শিক্ষায় ত্রিমেরু তন্ত্রের প্রস্তাব করেছেন – Educator (শিক্ষক) Educarnd (শিক্ষার্থী) Environment School (পরিবেশ বিদ্যালয়) শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং পরিবেশের পারস্পরিক ক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষাকার্য সম্পাদন হয়ে থাকে।
(8) প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রক্রিয়া (Direct and Indirect Process) : শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি সংযোগের মাধ্যমে যে শিক্ষণ – শিখন ( Teaching – Learning ) কার্য পরিচালিত হয় তাই হল প্রত্যক্ষ শিক্ষার প্রক্রিয়া। কিন্তু শিক্ষার্থী যখন অনিয়ন্ত্রিত ও প্রথামুক্ত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষালাভ করে তখন সেই প্রক্রিয়াকে বলা হয় পরোক্ষ শিক্ষার প্রক্রিয়া।
(9) অভিজ্ঞতার উন্নয়ন (Enrichment of Experience) : শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল অভিজ্ঞতার উন্নয়ন। সাধারণ ব্যক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবনের লক্ষ্য কেন্দ্র করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। অভিজ্ঞতাই ব্যক্তির যে – কোনো কার্যসম্পাদনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
(10) লক্ষ্য নির্ভর (Goal attainment) : শিক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল প্রতিটি মানুষের জীবনের লক্ষ্যপূরণ। শিক্ষা হল লক্ষ্য নির্ভর একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি তার জীবনের লক্ষ্য ও সামর্থ্যকে কেন্দ্র করে শিক্ষাকে পরিচালিত করে।
(11) শিক্ষার বৈজ্ঞানিক প্রকৃতি (Scientific nature of Education) : আধুনিক যুগ হল বিজ্ঞানের যুগ। তাই আজকের শিক্ষা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর। শিক্ষা সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে থাকে। যেমন – সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, নৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং সৌন্দর্যবোধের বিকাশ ইত্যাদি। শিক্ষা শিক্ষার্থীকে জ্ঞান, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে ধারাবাহিক বিজ্ঞাননির্ভর জীবন গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
(12) সামাজিক পরিবর্তনের হাতিয়ার (Instrument of Social Change) : শিক্ষা হল সমাজ পরিবর্তনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। শিক্ষা সমাজের সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভৃতি দিকের পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।