রামমোহন সম্পাদিত পত্রিকার নাম কী? রামমোহন ব্যাকরণ বিষয়ক কোন্ গ্রন্থ রচনা করেন? বাংলা গদ্যে রামমোহনের অবদান আলোচনা করো।

রামমোহন সম্পাদিত পত্রিকার নাম ‘সম্বাদ কৌমুদী’। রামমোহন রায় কর্তৃক রচিত ব্যাকরণ বিষয়ক গ্রন্থটি হল ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’।

মিশনারিদের পর রামমোহন রায় বাংলা গদ্যকে কয়েক পদক্ষেপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ রামমোহন রায়কে ‘ভারতপথিক’ ভূষণে ভূষিত করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের এ মন্তব্য যথার্থ। রামমোহন সমাজসংস্কারের পাশাপাশি বেশ কিছু সংস্কারমূলক বইও লিখেছিলেন। ফলে সাহিত্যের শিল্পশ্রী ও কাব্যসুষমা তাঁর রচনায় অনুপস্থিত। তবুও ঈশ্বরগুপ্ত লিখেছেন-“দেওয়ানজী জলের ন্যায় সহজ ভাষা লিখিতেন, তাহাতে কোনো বিচার বিবাদঘটিত বিষয় লেখায় মনের অভিপ্রায় ও ভাবসকল অতি সহজে স্পষ্টরূপে প্রকাশ পাইত, এইজন্য পাঠকেরা অনায়াসেই হৃদয়ঙ্গম করিতেন, কিন্তু সে লেখায় শব্দের বিশেষ পরিপাট্য ও তাদৃশ্য মিষ্টতা ছিল।”

রামমোহন প্রথমে কিছু গ্রন্থ অনুবাদে নজর দিয়েছিলেন। অনুবাদমূলক গ্রন্থগুলি হল ‘বেদান্তসার’ (১৮১৫), ‘বেদান্তগ্রন্থ’ (১৮১৫)। এইসব অনুবাদের মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালিকে ব্রাহ্মধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করতে চেয়েছিলেন। তবে ধর্মীয় গোঁড়ামি রামমোহনের কখনও ছিল না। অনুবাদ কর্মে ভাষাকে সরল করার চেষ্টা করলেও বহু ক্ষেত্রেই গম্ভীর থেকে গেছে। আসলে তা ছিল যুগরুচির প্রভাব। রামমোহনের গদ্য সম্পর্কে সুকুমার সেন লিখেছেন-“গীর্জা ও পাঠশালার বাইরে আনিয়া, বিচার বিশ্লেষণে উচ্চতর চিন্তার বাহন হিসাবে প্রথম ব্যবহারে লাগাইয়া, বাঙ্গালা গদ্যকে জাতে তুলিলেন আধুনিককালের পুরোভূমিকায় সবচেয়ে শক্তিশালী ও মনস্বী ব্যক্তি রামমোহন রায়।”

রামমোহন পাঁচটি উপনিষদের পাশাপাশি বেশ কিছু বিতর্কমূলক গ্রন্থ রচনায় মন দিয়েছিলেন। রামমোহনের বিতর্কমূলক গ্রন্থগুলি হল-‘ভট্টাচার্যের সহিত বিচার’ (১৮১৭), ‘গোস্বামীর সহিত বিচার’ (১৮১৮), ‘কবিতাকারের সহিত বিচার’ (১৮২০) ‘সহমরণ বিষয়ক প্রবর্তক নিবর্তক সম্বাদ’। বাদ-প্রতিবাদের পাশাপাশি তর্কের গদ্যও যে স্বচ্ছ হতে পারে, তা তিনি দেখান। এক যুক্তিবোধ নিয়ে তিনি বাংলা গদ্যে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। রামমোহনই বাংলা গদ্যকে একটা গ্রানিট স্তরের ওপর দাঁড় করিয়ে দেন। রামমোহনের গদ্যের সামান্য নিদর্শন দেওয়া যাক-“শতার্থ বৎসর হইতে অধিককাল

এদেশে ইংরেজের অধিকার হইয়াছে তাহাতে প্রথম ত্রিশ বৎসরে তাঁহাদের বাক্যের ও ব্যবহারের দ্বারা ইহা সর্বত্র বিখ্যাত ছিল…।”

রামমোহনের গদ্যের জটিলতা অবশ্যই আছে, তবে তিনিই প্রথম গদ্যের একটা নির্দিষ্ট কাঠামো দাঁড় করিয়েছিলেন। অন্যদিকে, রামমোহনের গদ্য ছিল কর্মের উপযোগী, ফলে সেখানে গদ্যে স্টাইল বা সৌন্দর্য খুঁজতে যাওয়া নিরর্থক। তবুও বাংলা গদ্যের প্রথম পর্বে রামমোহন একজন স্মরণীয় ব্যক্তি। তাই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন-“কী রাজনীতি, কী বিদ্যাশিক্ষা, কী সমাজ, কী ভাষা, আধুনিক বঙ্গদেশে এমন কিছুই নাই রামমোহন রায় স্বহস্তে যাহার সূত্রপাত করিয়া যান নাই।”

রামমোহনের বিতর্কমূলক চারটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করো। বাংলা গদ্যে রামমোহনের অবদান আলোচনা করো।

চরে রামমোহনের বিতর্কমূলক চারটি প্রশ্ন হল- ‘ভট্টাচার্যের সহিত বিচার’ (১৮১৭), ‘গোস্বামীর সহিত বিচার’ (১৮১৮), ‘কবিতাকারের সহিত বিচার’ (১৮২০), ‘সহমরণ বিষয়ক প্রবর্তক নিবর্তক সম্বাদ’ (১৮১৯)।

মিশনারিদের পর রামমোহন রায় বাংলা গদ্যকে কয়েক পদক্ষেপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ রামমোহন রায়কে ‘ভারতপথিক’ আখ্যা দিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের এ মন্তব্য যথার্থ ছিল। রামমোহন সমাজসংস্কারের পাশাপাশি বেশ কিছু সংস্কারমূলক বইও লিখেছিলেন। ফলে সাহিত্যের শিল্পশ্রী ও কাব্যসুষমা তাঁর রচনায় অনুপস্থিত। তবুও ঈশ্বরগুপ্ত লিখেছেন-“দেওয়ানজী জলের ন্যায় সহজ ভাষা লিখিতেন, তাহাতে কোনো বিচার বিবাদঘটিত বিষয় লেখায় মনের অভিপ্রায় ও ভাবসকল অতি সহজে স্পষ্টরূপে প্রকাশ পাইত, এইজন্য পাঠকেরা অনায়াসেই হৃদয়ঙ্গম করিতেন, কিন্তু সে লেখায় শব্দের বিশেষ পরিপাট্য ও তাদৃশ্য মিষ্টতা ছিল।”

রামমোহন প্রথমে কিছু গ্রন্থ-অনুবাদে নজর দিয়েছিলেন। অনুবাদমূলক গ্রন্থগুলি হল ‘বেদান্তসার’ (১৮১৫), ‘বেদান্তগ্রন্থ’ (১৮২৫)। এইসব অনুবাদের মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালিকে ব্রাহ্মধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করতে চেয়েছিলেন। তবে ধর্মীয় গোঁড়ামি রামমোহনের কখনও ছিল না। অনুবাদ কর্মে ভাষাকে সরল করার চেষ্টা করলেও বহু ক্ষেত্রেই গম্ভীর থেকে গেছে। আসলে তা ছিল যুগরুচির প্রভাব। রামমোহনের গদ্য সম্পর্কে সুকুমার সেন লিখেছেন-“গীর্জা ও পাঠশালার বাইরে আনিয়া, বিচার বিশ্লেষণে উচ্চতর চিন্তার বাহন হিসাবে প্রথম ব্যবহারে লাগাইয়া, বাঙ্গালা গদ্যকে জাতে তুলিলেন আধুনিককালের পুরোভূমিকায় সবচেয়ে শক্তিশালী ও মনস্বী ব্যক্তি রামমোহন রায়।”

বাদ-প্রতিবাদের পাশাপাশি তর্কের গদ্যও যে স্বচ্ছ হতে পারে তা তিনি দেখান। এক যুক্তিবোধ নিয়ে তিনি বাংলা গদ্যে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। রামমোহনই বাংলা গদ্যকে

গ্রানিট স্তরের ওপর দাঁড় করিয়ে দেন। রামমোহনের গদ্যের সামান্য নিদর্শন দেওয়া যাক-“শতার্থ বৎসর হইতে অধিককাল এদেশে ইংরেজের অধিকার হইয়াছে তাহাতে প্রথম ত্রিশ বৎসরে তাঁহাদের বাক্যের ও ব্যবহারের দ্বারা ইহা সর্বত্র বিখ্যাত ছিল…”

রামমোহনের গদ্যের জটিলতা অবশ্যই আছে, তবে তিনিই প্রথম গদ্যের একটা নির্দিষ্ট কাঠামো দাঁড় করিয়েছিলেন। অন্যদিকে, রামমোহনের গদ্য ছিল কর্মের উপযোগী, ফলে সেখানে গদ্যের স্টাইল বা সৌন্দর্য খুঁজতে যাওয়া নিরর্থক। তবুও বাংলা গদ্যের প্রথম পর্বে রামমোহন একজন স্মরণীয় ব্যক্তি। তাই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন-“কী রাজনীতি, কী বিদ্যশিক্ষা, কী সমাজ, কী ভাষা, আধুনিক বঙ্গদেশে এমন কিছুই নাই রামমোহন রায় স্বহস্তে যাহার সূত্রপাত করিয়া যান নাই।”

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading