শশাঙ্কের রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের কারণ ও পটভূমি আলোচনা করো। (Discuss the Political background for the rise of Sashanka.)

সপ্তম শতাব্দীতে ভারতবর্ষে গুপ্ত সম্রাটদের প্রত্যক্ষ শাসনের এলাকা কমে গিয়েছিল এবং তাদের প্রভাবাধীন এলাকায় অনুগত সামন্তরাজগণ মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছিলেন। ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এইসব নামমাত্র অধীনত বা অনুগত রাজন্য হলেন-সৌরাষ্ট্রে মৈত্রকবংশীয় ধ্রুব সেন, মান্দাশার বিষুবর্ধন, পশ্চিম মালবে হর্ষগুপ্তের পুত্র জীবিতগুপ্ত, কাম্বকুন্ডে মৌখরিরাজ ঈশানবর্মা, স্থানীশ্বরে আদিত্যবর্ধন, সমতট ও বর্ধমান ভূক্তিতে গোপচন্দ্র ও তার উত্তরসূরিগণ। কিন্তু গুপ্ত সাম্রাজ্যের ক্রমিক অবনতির সুযোগে এঁরাও ক্রমাগত শক্তিবৃদ্ধি করছিলেন। এর মধ্যে এক আকস্মিক বিপ্লব ঘটিয়ে মান্দাশোরের বিষুবর্ষন ভারতের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত আপন করতলগত করলেও সে ক্ষমতা স্থায়ী হয়নি। মহাসেনগুপ্তের সময় পর্যন্ত সামন্তরাজ্যগুলি নামেই অধীনতা ও মহানগত্য প্রকাশ করলেও তাঁরা প্রত্যেকেই গুপ্ত সাম্রাজ্যকে আপন করতলগত করবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। যদিও কাম্বকুন্ডের ঈশান বর্মা সেই কার্যে আংশিক সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু 595 খ্রিস্টাব্দে হঠাৎ গুপ্ত সাম্রাজ্যের ভাগ্যবিপর্যয় ঘটে। কলচুরিরাজ জাকেরগণ কর্তৃক মালব আক্রান্ত হয় এবং তারা পশ্চিম মালব দখল করে। অতঃপর কাগুরাজ মহাসেনগুপ্তকে পরাজিত ও নিহত করে গুপ্ত রাজধানী উজ্জয়িনী দখল করে। অন্তরাজের এই আকস্মিক নিধনে, তাঁর নাবালক পুত্রদ্বয় কুমারগুপ্ত ও মাধবগুপ্ত স্থানীশ্বর ব্রিজের আশ্রিত হয়। স্থানীশ্বররাজ প্রভাকরবর্ধন ছিলেন কুমারগুপ্ত ও মাধবগুপ্তের লিমিতুতো দাদা। কিন্তু প্রভাকরবর্ধন এই নাবালক সম্রাট পুত্রদ্বয়কে অনুচররূপে নিয়োজিত করেন, যা বাণভট্টের ‘হর্ষচরিত’ থেকে জানা যায়। মহাসেনগুপ্তের বিশ্বস্ত সামন্ত সহাক কেন প্রভাকরবর্ধন ও তাঁর পুত্রদের বিরুদ্ধে সমরসজ্জা করেন তার ইঙ্গিত ওয়ানে পাওয়া যায়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading