শিক্ষামূলক রাশিবিজ্ঞান:
রাশি বিজ্ঞানের যে শাখার মাধ্যমে। শিক্ষামূলক তথ্যগুলিকে সংগ্রহ করে যথাযথভাবে বিন্যস্ত এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাৎপর্য নির্ণয় করা হয়, তাকে শিক্ষাগত রাশিবিজ্ঞান বলে।
শিক্ষামূলক রাশিবিজ্ঞানের পরিধি ও প্রয়োজনীয়তা :
বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে রাশিবিজ্ঞানের ভূমিকা অনস্বীকার্য। শিক্ষাক্ষেত্রে রাশিবিজ্ঞান বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। শিক্ষা-রাশিবিজ্ঞানের উপযােগিতাগুলি সম্পর্কে নীচে আলােচনা করা হল—
শিক্ষার্থীর অগ্রগতি পরিমাপ:
শিক্ষার একটি মূল উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের অগ্রগতির ধারা পরিমাপ করা। এই ধরনের কাজের উপরই শিক্ষার সার্থকতা নির্ভর করে। রাশিবিজ্ঞান আমাদেরকে এই কাজকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে সাহায্য করে।
তুলনামূলক আলােচনা:
রাশিবিজ্ঞানের সাহায্যে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাপ্ত তথ্যগুলির মধ্যে খুব সহজেই তুলনা করা সম্ভব। এর সাহায্যে আমরা দুই বা ততােধিক দলের প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে তুলনা করতে পারি। যেমন— গড় নির্ণয়ের মাধ্যমে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সম্পর্কে জানা যায়, তেমন বিষমতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সম্পর্কে পৃথকভাবে জানা সম্ভব হয়।
শিক্ষামূলক তথ্যের প্রকাশ:
শিক্ষামূলক বিভিন্ন পরিসংখ্যানের মাধ্যমে শিক্ষামূলক ও মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষাগুলির সত্যতা নিরূপণ করে শিক্ষার্থীদের গুণাবলি সহজে নির্ণয় করা যায়। যেমন— কোনাে একটি শ্রেণির ছাত্রদের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরকে সহজতম উপায়ে একটি মাত্র সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
গবেষণামূলক কাজের ক্ষেত্রে:
শিক্ষামূলক বিভিন্ন গবেষণার কাজে ব্যবহৃত উপাদানসমূহের সমাধান ও প্রয়ােগমূলক কাজে রাশিবিজ্ঞানের ব্যবহার হয়।
ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা লাভ:
রাশিবিজ্ঞানের আর-একটি উল্লেখযােগ্য দিক হল ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়। যেমন— রিগ্রেশন ইকোয়েশন পদ্ধতির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সহজেই বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়।
শিক্ষার সঠিক পরিকল্পনা রচনা:
শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি নির্ণয়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনাে শিক্ষাবর্ষে প্রতি বছর কতজন শিক্ষার্থী হবে, তাদের জন্য শিক্ষাব্যবস্থার সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ ইত্যাদির জন্য রাশিবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে।
শিক্ষামূলক অভীক্ষা প্রস্তুত:
রাশিবিজ্ঞানের কৌশল প্রয়ােগ করে আমরা গাণিতিক যুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষামূলক অভীক্ষাগুলিকে অপেক্ষাকৃত নির্ভুল তৈরি করতে পারি।
তথ্যগুলিকে সুশৃঙ্খলভাবে বিন্যস্ত:
রাশিবিজ্ঞান প্রাপ্ত সংখ্যামূলক তথ্যগুলিকে সুশৃঙ্খলভাবে বিন্যস্ত করতে সাহায্য করে। যার ফলে আমরা খুব সহজেই এগুলি থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি।
গাণিতিক যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত:
রাশিবিজ্ঞানের ভিত্তি হল গণিত আর গণিতের সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে অপেক্ষাকৃত নির্ভুল হয়।
রাশিবিজ্ঞানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর যথার্থ মূল্যায়ন সম্ভব হয়। যেমন গড় নির্ণয়ের মধ্য দিয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সম্পর্কে যেমন জানা যায় তেমনই বিষমতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সম্পর্কে পৃথকভাবে জানা সম্ভব হয়। সুতরাং বলা যায়, রাশিবিজ্ঞানের কৌশল শিক্ষামূলক তথ্যগুলিকে একদিকে যেমন অপেক্ষাকৃত সহজসরলভাবে প্রকাশ করতে সাহায্য করে, অন্যদিকে তেমনি এই পদ্ধতি প্রয়ােগ করে প্রাপ্ত তথ্যগুলিকে অনেক বেশি অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ করা সম্ভব হয়।