সামাজিক পরিবর্তনের বিভিন্ন কারণ
সভ্যতার আদি পর্বে প্রত্যেক শিশু তাদের শিক্ষা, নিজ পিতামাতার কাছ থেকেই পেয়ে থাকতো, কিন্তু সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে সমাজে যখন আরও জটিলতা আসতে শুরু করলো, তখন পিতামাতার কাছ হতে প্রাপ্ত পারিবারিক শিক্ষা শিশুর সর্ব দিকের বিকাশের জন্য যথার্থ হল না। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় নামক একটি শিক্ষা সংস্থার উৎপত্তি ঘটে, যা শিশুর শিক্ষায় প্রত্যক্ষ সহায়ক মাধ্যম হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। ‘School’ শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ‘Skhole’ থেকে যার অর্থ ‘অবসর’ কিংবা অবসর বিনোদনের সময় তাত্ত্বিক আলোচনার ক্ষেত্র। বর্তমানে ‘স্কুল’ শব্দটিকে এত হাল্কাভাবে গ্রহণ করা হয় না, এখন এই ধারণাটি প্রাইম টাইম কার্যকলাপে পরিবর্তিত হয়েছে।
আধুনিককালে বিদ্যালয়কে শিক্ষার সবচেয়ে উপযুক্ত, সক্রিয় এবং আনুষ্ঠানিক সংস্থা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সময়ের পরিবর্তিত প্রয়োজন অনুসারে, বিদ্যালয় তার নির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুযায়ী বিকাশ বিকাশ লাভ করেছ। নিম্নে কিছু সংজ্ঞার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ধারণা আরও পরিস্ফুট করা হল।
- A school is an educational institution designed to provide learning spaces and learning environments for the teaching of students under the direction of teachers (Wikipedia).
- শিক্ষাবিদ ক্যাটারগুড (Catergood) বিদ্যালয় সম্পর্কে বলেছেন,- এক বা একাধিক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের তত্ত্বাবধানে, একটি নির্দিষ্ট আসবাবপত্র যুক্ত বাসগৃহ যেখানে একটি নির্দিষ্ট পাঠক্রম শিক্ষার্থীদের অনুশীলন করানো হয়।
- Dictionary of Education– এ বিদ্যালয় বলতে সংঘবদ্ধ ছাত্রদের প্রতিষ্ঠান বোঝানো হয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষালাভ করে। তবে আমরা বিদ্যালয় বলতে এমন একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে বুঝে থাকি যার উদ্দেশ্য হল সমাজের অভিজ্ঞতাকে একযুগ থেকে অন্যযুগে সঞ্চালিত করা।
- According to Merriam-Webster dictionary,- An organization that provides instruction: such as-
- a group of scholars and teachers pursuing knowledge together that with similar groups constituted a medieval university
- one of the four faculties of a medieval university
- an institution for specialized higher education often associated with a university
বিদ্যালয়ের কার্যাবলী (Function of School) :
- বৌদ্ধিক বিকাশ : বিদ্যালয়ের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশ সাধন। একজন শিক্ষার্থীকে নতুন নতুন বিষয় কিংবা জ্ঞানের সাথে পরিচয় ঘটানো কিংবা নতুন শিক্ষণীয় বিষয় শেখার জন্য উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া হল বিদ্যালয়ের কাজ।
- ব্যক্তিসত্ত্বার বিকাশ : বিদ্যালয়ের অপর একটি কাজ হল সকল শিক্ষার্থীর সুপ্ত সম্ভাবনাময় ব্যক্তিসত্তার যথাযথ বিকাশ সাধন করা। বিভিন্ন পরিবার থেকে শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসে বিভিন্ন চাহিদা, সামর্থ্য, রুচি, আগ্রহ নিয়ে। বিদ্যালয় পরিবেশ সকল শিক্ষার্থীর বিভিন্ন চাহিদার পরিতৃপ্তি ঘটিয়ে ব্যক্তিসত্তার যথাযথ বিকাশে সহায়তা করে।
- বৃত্তিমূলক নির্দেশনা : বিদ্যালয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল বৃত্তিমূলক নির্দেশনা দেওয়া। শিক্ষাজীবন শেষ করে শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনে প্রবেশ করে। কর্মজীবনে সফল হতে গেলে যোগ্যতা অনুযায়ী সঠিক বৃত্তি নির্বাচনের প্রয়োজন হয়। বিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীরা বৃত্তিমূলক নির্দেশনা পেয়ে থাকে।
- শিক্ষামূলক নির্দেশনা : শিক্ষামূলক নির্দেশনা দান করা বিদ্যালয়ের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সমাজের বিভিন্ন অংশের ছেলেমেয়েরা শিক্ষালাভের জন্য বিদ্যালয়ে আসে। বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষাগত ক্ষেত্রের সমস্যা সমাধানে শিক্ষামূলক নির্দেশনা দানের মাধ্যমে সহায়তা করে।
- মূল্যায়ন : বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক শিক্ষার আর একটি কাজ হল শিক্ষার্থীর সামগ্রিক মূল্যায়ন করা। পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী কতটুকু সফলতা অর্জন করেছে তার পাশাপাশি চারিত্রিক গুণাবলির বিকাশ এবং নৈতিক মূল্যবোধের মূল্যায়ন বিদ্যালয় করে থাকে।