সাম্য বলতে প্রধানত সমতা কে বোঝায়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জাতি-ধর্ম-বর্ণ স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকে যখন সমান সুযোগ সুবিধা দান করা হয় তখনই তাকে ‘সাম্য’ বলে। ল্যাস্কির মত:- অধ্যাপক ল্যাস্কির মতে সাম্য বলতে বিশেষ সুযোগ সুবিধার অনুপস্থিতি এবং প্রত্যেকের জন্য সমান সুযোগ সুবিধার উপস্থিতিতেই বোঝানো হয়।
সাম্যের রূপ:- সাম্য একটি বহুমাত্রিক ধারণা। তাই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সাম্যের বিভিন্ন রূপ পাওয়া যায়। যথা- ১) স্বাভাবিক সাম্য:-সাম্য সম্পর্কে এটি প্রাচীন ধারণা। এই ধারণা অনুসারে জন্ম থেকেই স্বাধীন প্রতিটি মানুষ সমান অধিকার ভোগ করে। যেমন-রুশো বলতেন, মানুষ জন্ম থেকেই স্বাধীন। এই ধারণা প্রাচীন গ্রিসে ও রোমে প্রচলিত ছিল।
২) সামাজিক সাম্য:-সামাজিক সাম্য বলতে সামাজিক ক্ষেত্রে মানুষের সঙ্গে মানুষের সমতাকে বোঝায়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, বংশ, ধনী- দরিদ্র নির্বিশেষে সমস্ত মানুষ সমাজ থেকে সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলে এইরূপ সাম্য হয়।
৩) রাজনৈতিক সাম্য:-রাজনৈতিক সাম্য বলতে সমস্ত নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার ভোগের সমতা কে বোঝায়। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ, ভোটদান, সরকার গঠনের কাজে সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে তখনই রাজনৈতিক সাম্য সৃষ্টি হয়।
৪) আইনগত সাম্য:-বর্তমান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সাম্যের অন্যতম রূপ হল এটি। আইনগত সাম্য বলতে দুটি বিষয়কে বোঝানো হয় – ক) আইনের চোখে সমতা অর্থাৎ সবাইকে সমান বোঝায় ৷ খ) আইনের দ্বারা সমভাবে রক্ষিত হওয়া অর্থাৎ আইন সবাইকে সমানভাবে রক্ষা করবে।
৫) অর্থনৈতিক সাম্য:-আয় ও ধন বৈষম্যের উপস্থিতি না থাকাই হল অর্থনৈতিক সাম্য। অর্থাৎ অর্থনৈতিক সাম্য বলতে সমান কাজের অধিকার, সমান বেতন পাওয়ার অধিকার প্রভৃতি কে বোঝায়। লাস্কির মতে, অর্থনৈতিক সাম্য ছাড়া রাজনৈতিক সাম্য মূল্যহীন৷
৬) আন্তর্জাতিক সাম্য:-বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে প্রতিটি রাষ্ট্র পরস্পর এর উপর নির্ভরশীল হওয়ায় এই সামর্থ্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক সাম্য বলতে বিশ্বের ছোট-বড়, প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সম মর্যাদা ও সমান অধিকার প্রভৃতি কে বোঝায়।সাম্যের উক্ত বিভিন্ন রোগ গুলি তারা বর্তমানে গণতন্ত্রের ভিত্তি সুদৃঢ় হয়েছে।