সিন্ধুনদকে কেন্দ্র করে মহান সিন্ধু সভ্যতার বিকাশ ও সমৃদ্ধি ঘটে বলে “Archaeological Survey of India’-র তদানীন্তন অধিকর্তা স্যার জন মার্শাল এই সভ্যতার নামকরণ হিসেবে ‘সিন্ধু সভ্যতা’ নামটি ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু সর্বাধুনিক খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই সভ্যতার নাম হিসেবে ‘সিন্ধু সভ্যতা’ নামটি আর পর্যাপ্ত বা সম্পূর্ণ মনে হচ্ছে না। তাই এই সভ্যতার নতুন নাম হল হরপ্পা সভ্যতা। হরপ্পা সভ্যতা নামকরণের কারণগুলি হল-
① ইরাবতী নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত প্রাচীন হরপ্পা নগরটি প্রাচীনত্ব, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিচারে অন্যান্য নগর অপেক্ষা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
② অন্যান্য নগরের অধিবাসীগণ অস্ত্র, পোড়ামাটির সামগ্রী তৈরিতে হরপ্পাকে অনুসরণ করত।
) উৎখনন দ্বারা প্রাপ্ত বস্তু থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়, হরপ্পা নগরটি অন্যান্য নগর থেকে অনেক বেশি প্রাচীন।
④) আধুনিক প্রত্নবিজ্ঞানে কোনো সভ্যতার নামকরণ পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটেছে। গদি সমসংস্কৃতিসম্পন্ন একাধিক প্রত্নকেন্দ্র আবিষ্কৃত হয় তাহলে প্রথম আবিষ্কৃত প্রশ্নকেন্দ্রের নামানুসারে সভাতার নাম রাখা হয়। এক্ষেত্রে 1826 সালে চার্লস ম্যাসন হরপ্পার টিবির যথা জানান। আলোকজান্ডার ক্যানিংহাম প্রথম হররাতেই কতকগুলি সীলমোহর পেয়েছিলেন। তাই এই সভ্যতাকে ‘হরপ্পা সভ্যতা’ বলাই যুক্তযুক্ত।
③) পরবর্তীকালে নানা আবিষ্কার ও নতুন নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে জানা গেছে এই সভ্যতার কেন্দ্রগুলি সিন্ধুনদ ছাড়াও সরস্বতী, যমুনা, গলা, পাঞ্জাবের পঞ্চনদীর তীরে গড়ে উঠেছিল, তাই শুধু সিন্ধুনদের নামে নামকরণ করা যুক্তিযুক্ত নয়। উপরিউক্ত কারণগুলির জন্য প্রত্নতত্ত্ববিদগণ বর্তমানে সিঙ্গু সভ্যতাকে ‘হরমা সভ্যতা’ বলে থাকেন।