সিন্ধু সভ্যতার সঙ্গে বৈদিক সভ্যতার সম্পর্ক প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের একটি বিতর্কিত বিষয়। তবে জন মার্শাল ও বেশির ভাগ আধুনিক ঐতিহাসিক মনে করেন দুই সভ্যতা ভিন্ন এবং উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্যের থেকে বৈসাদৃশ্যই বেশি।
সিন্ধু সভ্যতা ছিল নগরকেন্দ্রিক, বৈদিক সভ্যতা ছিল গ্রামীণ। সিন্ধুবাসী তামা, টিন, ব্যবহার করত। আর্যরা তামা ও টিনের সঙ্গে লোহাও ব্যবহার করত। সিন্ধু নগরের অর্থনীতিতে শিল্পবাণিজ্য ছিল প্রধান, আর্য অর্থনীতি ছিল পশুপালন ও কৃষিনির্ভর। হরপ্পাবাসীরা পোড়া ইটের বহুতল বাড়িতে বাস করত, আর্যরা মাটির ঘরে খড়ের চালায় বসবাস করত। সিন্ধু নগরে ঘোড়ার ব্যবহার হত না, আর্যরা ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করত। সিন্ধুবাসীরা শিব ও মাতৃদেবীর পূজা করত, বৈদিক যুগে লিঙ্গপূজার নিন্দা করা হয় এবং পুরুষ দেবতার প্রাধান্য ছিল। বৈদিক আর্যরা যজ্ঞ করত, কিন্তু হরপ্পাবাসীরা যজ্ঞ করতে জানত না। সিন্ধুবাসীরা লিখতে জানত, তাদের লিপি আছে; কিন্তু ঋগ্বৈদিক যুগের আর্যরা লিখতে জানত না, তাদের লিপিও ছিল না। এইসব পার্থক্যের কারণে মর্টিমার তুইলার বলেন, হরপ্পা সভ্যতার সঙ্গে বৈদিক সভ্যতার কোনো সম্পর্ক ছিল না।