ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে একজন অকীর্তিত ব্যক্তিত্ব হলেন হেলেন লেপচা। সারা ভারতে যখন স্বাধীনতার সংগ্রামের লড়াইয়ে ছুটে চলেছেন সংগ্রামীরা, তখন সিকিম পাহাড়ের সাংমু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হেলেন লেপচা। তাঁর জন্ম হয় 14 জানুয়ারি। তাঁর আসল নাম ছিল আসাংমাং সেলি। এই সময় দার্জিলিং ও কার্শিয়াং-এ ব্রিটিশদের আগমনের ফলে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ বৃদ্ধি পায়। এই সুযোগে হেলেন ও তাঁর পরিবার কার্শিয়াং-এ বসবাস শুরু করেন এবং সেখানে একটি স্কটিশ মিশনে তিনি পড়াশোনা শুরু করেন। এইসময় এক মিশনারি শিক্ষিকার দ্বারা তাঁর নতুন নামকরণ হয় হেলেন লেপচা 1916-18 সালে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি কার্শিয়াং-এর জনগণকে স্বাধীনতার আন্দোলনে আলোড়িত করতে আসেন এবং এই প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি 1916 সালে বিদ্যালয়ের পাঠ পরিত্যাগ করে স্বাধীনতার আন্দোলনে নিজেকে সমর্পণ করেন।
পরবর্তীকালে তিনি বিহারে বন্যার ত্রাণে স্বেচ্ছাসেবিকারূপে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং গান্ধিজির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হেলেন-কে নতুন রূপপ্রদান করে। এই সময় গান্ধিজি তাঁকে ‘সাবিত্রী দেবী’ নামে অভিহিত করেন। 1920-22 সালে গান্ধিজির অসহযোগ আন্দোলনের অনুপ্রেরণায় শিলিগুড়ি কংগ্রেস পরিচালিত করেন এবং তিন মাসের জন্য দার্জিলিং সদর জেলে বন্দি হন। পরবর্তীতে তাঁকে ও বছরের জন্য ব্রিটিশদের দ্বারা নজরবন্দি হয়ে থাকতে হয়।
1939-40 সাল নাগাদ নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের গৃহবন্দিকালে, কার্শিয়াং-এর গিদ্দা পাহাড়ে ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে নেতাজির অন্তর্ধানে সহায়তা করেন। হেলেন লেপচার অসামান্য দায়িত্ব ও দেশাত্মবোধের দরুন তাঁকে ভারত সরকার দ্বারা 1972 সালের 15 অগাস্ট তাম্রপত্র প্রদান করা হয়।