‘বীরবল’ কার ছদ্মনাম ? তিনি কত খ্ৰীষ্টাব্দে কোন পত্রিকার সম্পাদনা করেছিলেন ?

প্রমথ চৌধুরী বীরবল ছদ্মনামও তিনি ব্যবহার করেছেন। তার প্রথম প্রবন্ধ জয়দেব প্রকাশিত হয় সাধনা পত্রিকায় ১৮৯৩ সালে। তার সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল বীরবল

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কত খ্রীষ্টাব্দে কার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ? এই কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল

১৮০০ সালের ০৯ জুলাই কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম চত্বরে এই কলেজ স্থাপিত হয়। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপনের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ আধিকারিকদের ভারতীয় ভাষায় শিক্ষিত করে তোলা। এই প্রক্রিয়ায় বাংলা ও হিন্দির মতো ভারতীয় ভাষাগুলির বিকাশ ত্বরান্বিত হয়। এই সময়টির একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। ১৮১৫ সালে রাজা রামমোহন রায় পাকাপাকিভাবে কলকাতায় বসবাস শুরু করেন

আঞ্চলিকতাবাদ বলতে কী বােঝায় ? ভারতে আঞ্চলিকতাবাদের বিভিন্ন কারণগুলি ব্যাখ্যা কর(What does regionalism mean? Explain the various causes of regionalism in India)

উত্তর:- আঞ্চলিকতাবাদের অর্থ সম্পর্কে বিভিন্ন চিন্তাবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। সাধারনভাবে আঞ্চলিকতার ধারনা এবং ভারতীয় পরিস্থিতিতে আঞ্চলিকতার ধারনা এক নয়। তেমনি আবার আঞ্চলিকতাবাদ সম্পর্কিত পাশ্চাত্ত্য ও প্রাচ্য ধারনার মধ্যেও পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। টমাস ও হুয়েজলিন আঞ্চলিকতাবাদের পশ্চিমী ধারণা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। এই রাজনীতিক সমাজবিজ্ঞানীদ্বয়ের মতানুসারে উপজাতি বা জাতির অংশবিশেষ (subnational) এবং অতিজাতি (transnational)-র মধ্যে … বিস্তারিত পড়ুন

রাজনীতিতে জাতপাত এবং বর্ণের রাজনীতিকরণ’ বলতে আপনি কী বোঝেন? | What do you mean by ‘politicization of caste and caste in politics’?

জাতপাতের রাজনীতি: ভারতে , একটি বর্ণ হল একটি (সাধারণত অন্তঃবিবাহিত ) সামাজিক গোষ্ঠী যেখানে সদস্যপদ জন্ম দ্বারা নির্ধারিত হয় ।  বর্ণের প্রায়ই সম্পর্কিত রাজনৈতিক পছন্দ থাকে। বিস্তৃতভাবে, ভারতীয় জাতিগুলি অগ্রগামী জাতি , অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী , তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতিতে বিভক্ত , যদিও ভারতীয় খ্রিস্টান এবং ভারতীয় মুসলমানরাও বর্ণ হিসাবে কাজ করতে পারে। ভারতে রিজার্ভেশন ব্যবস্থা মূলত ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসাবে কাজ করে যাতে পদ্ধতিগতভাবে সুবিধাবঞ্চিত বর্ণ গোষ্ঠীগুলির প্রতিনিধিত্ব প্রদান করা হয়। ভারতের বর্ণপ্রথা প্রভাবশালী হয়েছে। একজনের জাত রাজনৈতিক ক্ষমতা , জমি এবং … বিস্তারিত পড়ুন

ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রকৃতির পরিবর্তন সম্পর্কে একটি নোট লেখ(Write a note on the changing nature of parliamentary democracy in India.)

উত্তর: গ্রেট ব্রিটেনের সংসদীয় শাসনব্যবস্থাকে বিশ্বের যে দেশগুলি অনুসরণ করেছে তার মধ্যে ভারত অন্যতম। ভারতের সংবিধান পর্যালােচনা করলে দেখা যায় যে, ভারতের শাসনব্যবস্থাকে সংসদীয় বা মন্ত্রীপরিষদ চালিত শাসনব্যবস্থারূপে অভিহিত করার পক্ষে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সেই কারণগুলি হল一

[1] নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতি: সংসদীয় শাসনব্যবস্থার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল নিয়মতান্ত্রিক বা নামসর্বস্ব রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতি। তত্ত্বগতভাবে নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান রাষ্ট্রের প্রধান হলেও কার্যত তিনি মন্ত্রীসভার পরামর্শ অনুসারে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। তাঁর নামে শাসনকার্য পরিচালিত হলেও মন্ত্রীসভা হল দেশের প্রকৃত শাসক। ভারতে রাষ্ট্রপ্রধানরূপে রাষ্ট্রপতি এই ধরনের নিয়মতান্ত্রিক শাসকের ভূমিকাই পালন করেন।

[2] ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতি বর্জিত: সংসদীয় শাসনব্যবস্থার পাঠভূমি গ্রেট ব্রিটেনের মতাে ভারতেও ক্ষমতাস্বতন্ত্রীকরণ নীতি স্বীকৃত হয়নি। সংসদীয় শাসনব্যবস্থার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের পরস্পর নির্ভরশীল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এই ধরনের শাসনব্যবস্থায় আইনসভায় যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সেই দলের নেতা বা নেত্রীরা মন্ত্রীসভা গঠন করে দেশ শাসন করেন। আবার বিচার বিভাগের দায়িত্বে যেসব বিচারপতিরা থাকেন তাদের নিয়ােগতালিকা মন্ত্রীসভা অনুমোদন করে। সংসদীয় ব্যবস্থার এই বৈশিষ্ট্য ভারতে পুরােপুরি অনুসৃত হয়েছে।

[3] মন্ত্রীসভা গঠনে আইনসভার ভূমিকা: সংসদীয় সরকারের একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য হল মন্ত্রীসভা গঠন করার ব্যাপারে আইনসভার নিম্নকক্ষের কার্যকরী ভূমিকা। ভারতে কেন্দ্রীয় আইনসভার নিম্নকক্ষ লােকসভায় যে দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, রাষ্ট্রপতি সেই দলের নেতা বা নেত্রীকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানান।

[4] বিরােধী দলের গুরুত্ব: সংসদীয় বা মন্ত্রীসভা-চালিত সরকারের একটি মুখ্য বৈশিষ্ট্য হল শক্তিশালী বিরােধী দলের উপস্থিতি। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরােধী দল না থাকলে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়। বিরােধী দলই সরকারকে যথাযথভাবে দেশ শাসন করতে বাধ্য করে। বিরােধী দল কর্তৃক ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচনা সংসদীয় গণতন্ত্রের একটি স্তম্ভম্বরূপ। ভারতে সংসদীয় ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল শক্তিশালী বিরােধী দলের উপস্থিতি।

[5] মন্ত্রীসভার দায়বদ্ধতা: সংসদ বা আইনসভার নিম্নকক্ষের কাছে মন্ত্রীসভার দায়বদ্ধতা ভারতের সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় পূর্ণভাবে অনুসৃত হয়েছে। ভারতীয় আইনসভার নিম্নকক্ষ লােকসভার কাছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা তার যাবতীয় কাজকর্মের জন্য দায়বদ্ধ থাকে। মন্ত্রীসভার এই দায়িত্বকে যৌথ দায়িত্ব বলা হয়। এই কারণে লােকসভায় কোনাে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হলে সমগ্র মন্ত্রীসভা পদত্যাগে বাধ্য হয়।

[6] অঙ্গরাজ্যে সংসদীয় ব্যবস্থার প্রচলন: সংসদীয় শাসনব্যবস্থার অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য অনুসরণ করে ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলিতেও সংসদীয় শাসনব্যবস্থা প্রচলিত হয়েছে রাজ্যগুলিতে নিয়মতান্ত্রিক প্রধানের ভূমিকা পালন করেন রাজ্যপাল। রাজ্যের শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্যপাল রাজ্যমন্ত্রীসভার পরামর্শ অনুযায়ী চালিত হন। অন্যদিকে, রাজ্যমন্ত্রীসভা আবার রাজ্য-আইনসভার কাছে যাবতীয় কাজকর্মের জন্য দায়বদ্ধ থাকে। আইনসভার আস্থা হারালে মন্ত্রীসভা পদত্যাগে বাধ্য হয়।

[7] প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব: সংসদীয় শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব। ব্রিটিশ সংসদীয় ব্যবস্থার বিশেষজ্ঞরা প্রধানমন্ত্রীকে মন্ত্রীসভার সমপর্যায়ভুক্ত সহকর্মীদের মধ্যে অগ্রগণ্য (First among the equals) বলে অভিহিত করেছেন। ভারতেও অনুরূপ ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। ভারতের সংসদীয় ব্যবস্থায় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতা বা নেত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।

[8] সিদ্ধান্তের গােপনীয়তা: মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তের গোপনীয়তা রক্ষা সংসদীয় শাসনব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। ব্রিটিশ সংসদীয় ব্যবস্থায় মন্ত্রীসভার বৈঠকের কার্যবিবরণী গােপন দলিল হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। ভারতীয় সংসদীয় ব্যবস্থাতেও মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তের গােপনীয়তা রক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

[9] আইন বিভাগের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ: সংসদীয় শাসনব্যবস্থার রীতি অনুসরণ করে ভারতে আইন বিভাগ তথা সংসদের (আইনসভা) ওপর শাসন বিভাগ বা মন্ত্রীসভার আধিপত্য বজায় রয়েছে। আইন প্রণয়নের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা পার্লামেন্ট বা সংসদে এবং রাজ্য মন্ত্রীসভা অঙ্গরাজ্যগুলির আইনসভায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।

উপসংহার: সমালােচকরা মনে করেন, ভারতে সংসদীয় শাসনব্যবস্থার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি-শাসিত সরকারের কিছু বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটেছে। তাই তাঁরা ভারতকে পূর্ণাঙ্গ সংসদীয় শাসনব্যবস্থার দেশ বলে অভিহিত করতে চাননি। যুক্তি হিসেবে সমালােচকরা রাষ্ট্রপতিকে পুরােপুরি নামসর্বস্ব শাসক বলে মেনে নিতে রাজি নন। রাজ্যে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা জারির বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার দেওয়া পরামর্শ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রত্যাখ্যানের ঘটনা, ত্রিশঙ্কু লােকসভায় একক বৃহত্তম দল বা জোটের নেতাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা গঠনের আহ্বান জানানাে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বিলে স্বাক্ষর না দিয়ে বিলটিকে পুনর্বার বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠানাে ইত্যাদি দৃষ্টান্তের কথা তারা তুলে ধরেন। পাশাপাশি বর্তমানে ভারতীয় সংসদের সার্বভৌমত্ব কার্যত মন্ত্রীসভার সার্বভৌমত্বে পরিণত হয়েছে বলেও তাঁরা মনে করেন। পরিশেষে বলা যায়, জুটিবিচ্যুতি সত্ত্বেও ভারতীয় শাসনব্যবস্থা সংসদীয় শাসনব্যবস্থার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহাসিক বিবর্তন লেখ। ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কিত ভারতের সংবিধানে কী কী বিধান রয়েছে?

ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকৃতি: The Nature of secularism in India ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সংবিধানের ২৫-২৮ নং ধারাগুলিতে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বিধানের ১৫ নং ধারায় ভিত্তিতে নাগরিকদের প্রতি রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনুরূপভাবে, সংবিধানের ১৬নং  … বিস্তারিত পড়ুন

ভারতীয় রাষ্ট্র অধ্যয়নের প্রধানপন্থা গুলি আলোচনাকরুন।

উত্তরঃ সুশৃঙ্খল পঠন-পাঠনের জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান কতগুলো অধ্যয়ন পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে। সমস্যার প্রকার ভেদে যে পদ্ধতি উপযোগী তা অনুসরণ করা হয়। সমাজ জীবনে পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে খাপ খাইয়ে চলতে হয়। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যয়ন পদ্ধতি গতিশীল। বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন পদ্ধতির কথা বলেছেন। এখানে সাধারণভাবে কয়েকটি স্বীকৃত পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি:- লর্ড ব্রাইস, ল্যাসওয়েল … বিস্তারিত পড়ুন

ভারতে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সংজ্ঞা দাও। রামজন্মভূমি আন্দোলনের উপর একটি সংক্ষিপ্ত নোট লেখ।

ভারতের রাজনীতিতে এক প্রধান শক্তি হিসেবে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি-র অবস্থান সুসংহত হয়েছিল ‘রথ যাত্রা’ নামে এক কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে। উত্তরঃ এটি ছিল যাকে বলা হয় এক পরিকল্পিত ‘রাজনৈতিক নাটক’ – যার লক্ষ্য ছিল ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগণের মনে বিজেপির রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করা। এই রথযাত্রার পরিকল্পনা করা হয়েছিল জঙ্গী হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির এক … বিস্তারিত পড়ুন

রামজন্মভূমি আন্দোলনের উপর একটি সংক্ষিপ্ত নোট লেখ।

আন্দোলনের ইতিহাস শুরুর দিকে দেশ স্বাধীন হলো 1947 সালে। অযোধ্যার শ্রী রাম জন্মভূমিতে রামলালা বিরাজমান হলেন (12-13 ডিসেম্বর, 1949) তৎকালীন প্রশাসন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিলো। হিন্দুসমাজ আদালতে যায়। রাম চবুতরা ও সীতা রসুইয়ে পূজার আরজি নিয়ে। যা এতদিন চলে আসছিল। আদালত তাদের প্রার্থনা অনুমোদন করেন। শ্রী রামের  নিত্য পূজা শুরু হয়। এর … বিস্তারিত পড়ুন

ভারতে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সংজ্ঞা দাও।

ভারতে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ছিল যাকে বলা হয় এক পরিকল্পিত ‘রাজনৈতিক নাটক’ – যার লক্ষ্য ছিল ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগণের মনে বিজেপির রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করা।

এই রথযাত্রার পরিকল্পনা করা হয়েছিল জঙ্গী হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির এক প্রচারমূলক মিছিল হিসেবে। এর সংগঠক ছিলেন বিজেপির নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, এটা চলবে কয়েক সপ্তাহ জুড়ে এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গা হয়ে মোট ৮ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের পবিত্র শহর অযোধ্যা পর্যন্ত যাবে।

এই রথ যাত্রার মূল দাবি ছিল অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে জনমত সংগঠিত করা। অযোধ্যা শহরের যে জায়গায় এই রামমন্দির নির্মাণের কথা বলা হয়, সেখানেই দেবতা রামচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল বলে হিন্দুরা বিশ্বাস করে। কিন্তু সেখানে মোগল সম্রাট বাবর ষোড়শ শতাব্দীতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন – যার নাম বাবরি মসজিদ এবং এ কারণে জায়গাটি ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের কাছেও পবিত্র।

পরিকল্পনা করা হয়, রথযাত্রা অযোধ্যায় পৌঁছানোর পর মি. আদভানি সেই বিতর্কিত স্থানটিতে রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

সে সময় সাংবাদিক হিসেবে সেই রথযাত্রা প্রত্যক্ষ করেছিলেন আর কে সুধামন। ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে তার পর থেকে কিভাবে বিজেপির উত্থান হয়েছে তাও দেখেছেন তিনি। তিনি কথা বলেছেন বিবিসির ফারহানা হায়দারের সাথে।

মি. সুধামন তখন কাজ করতেন সংবাদ সংস্থা পিটিআইতে। পিটিআই সেই ১৩ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ রথযাত্রা কভার করতে পাঠিয়েছিল তাকে, এবং গুজরাটের সোমনাথ শহর থেকে যখন এই মিছিল শুরু হয়, সেদিন থেকেই সেই রখযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে ভ্রমণ করেছিলেন তিনি।

“বিজেপির তখন এমন একটা রাজনৈতিক আইডিয়ার দরকার ছিল যাতে দলটি টিকে থাকতে এবং বিকশিত হতে পারে। অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের এই কর্মসূচি শুরু করা ছিল মি. আদভানির দিক থেকে এক মাস্টারস্ট্রোক। এর লক্ষ্য ছিল ক্ষমতায় যাবার জন্য ভারতের হিন্দু ভোটকে নিজেদের দিকে টেনে আনা” – বলছিলেন মি. সুধামন।

রথযাত্রার নেতৃত্বে ছিলেন মি. আদভানি তিনি বসেছিলেন একটি ট্রাকে যাকে সাজানো হয়েছিল প্রভু রামচন্দ্রের রথের আকার দিয়ে।

ভোট পাবার জন্যই কি বিজেপি এভাবে ধর্মকে ব্যবহার করেছিল?

প্রশ্ন করা হলে মি. সুধামন বলেন, “হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। এটাই ছিল তাদের রাজনীতির প্রধান অবলম্বন।”

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress