B.A. 5TH SEM GE1-P1-HISTORY SHORT QUESTION ANSWER

ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে মুদ্রার গুরুত্ব কি?

ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে মুদ্রার গুরুত্ব অপরিসীম। মুদ্রা শুধুমাত্র একটি অর্থনৈতিক মাধ্যম নয়, বরং এটি সমাজের রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং সাংস্কৃতিক অবস্থা প্রতিফলিত করে। বিভিন্ন সময়ে মুদ্রার ডিজাইন, এর ধাতু, প্রকারভেদ, ও মান ব্যবস্থা দেশ এবং শাসকদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা এবং বাণিজ্যের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য দেয়। মুদ্রার মাধ্যমে একটি সভ্যতার অর্থনৈতিক সম্পর্ক, সঙ্কট, মুদ্রাস্ফীতি, ও বৈদেশিক বাণিজ্যের চিত্র স্পষ্ট হয়। এছাড়া, মুদ্রার পরিবর্তন ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে সাম্রাজ্য, শাসক, ধর্ম, এবং সামরিক বিজয়ের সংকেত বহন করে, যা ইতিহাসবিদদের জন্য মূল্যবান তথ্যসূত্র হিসেবে কাজ করে।

হরপ্পার লিপি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

হরপ্পার লিপি বা সিন্ধু লিপি প্রাচীন হরপ্পা সভ্যতার একটি রহস্যময় লেখনী ব্যবস্থা। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ২৭০০-১৯০০ অবধি ব্যবহার হতো এবং সিন্ধু নদী উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে পাওয়া গেছে। মুদ্রার উপর এবং ইট, ধাতু, পাথর ও পটের টুকরোতে এই লিপি দেখা যায়। এটি প্রধানত পictোগ্রাফিক (চিত্র-চিহ্ন) লিপি ছিল, যেখানে প্রতিটি চিহ্ন একটি নির্দিষ্ট শব্দ বা ধারণাকে প্রকাশ করত। যদিও এর সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা বা পাঠ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, তথাপি গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে হরপ্পার লিপি এক সময়ে বাণিজ্য, প্রশাসন এবং সামাজিক যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হত।

বৈদিক যুগে ব্রাহ্মণ্যের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কি ছিল?

বৈদিক যুগে ব্রাহ্মণ্যের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এটি ছিল এক ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন, যা ভারতের প্রাচীন সমাজের কাঠামো গঠন করেছিল। ব্রাহ্মণ্য ধর্মে বৈদিক পুরাণ, যজ্ঞ, ত্যাগ এবং বিধি-বিধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। এই যুগে ব্রাহ্মণরা সমাজের পণ্ডিত, পুরোহিত এবং ধর্মীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যারা ধর্মীয় আচার ও রীতি নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করেছিল। ব্রাহ্মণ্য ধর্মের মাধ্যমে একটি শাস্ত্রীয় শিক্ষাব্যবস্থা, সমাজের শ্রেণীবিভাগ এবং রাজশক্তির সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। এর ফলে ভারতীয় ইতিহাসে একটি ধর্মীয় ও সামাজিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পরবর্তীকালে মুঘল ও ব্রিটিশ শাসনের সময়ও প্রভাবিত ছিল।

‘মধ্যপন্থা’ বলতে কি বোঝ?

‘মধ্যপন্থা’ বলতে এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি বা নীতি বোঝায়, যা চরমপন্থী বা একপেশে মতামত থেকে বিরত থেকে, সঠিক সমাধান বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হয়। এটি এমন একটি অবস্থান, যেখানে কোনো বিষয় বা পরিস্থিতিতে অতি কট্টর বা অতিরিক্ত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে সুষম, যুক্তিপূর্ণ ও সঠিক পথ অনুসরণ করা হয়। রাজনীতি, সমাজ বা নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে মধ্যপন্থা সাধারণত একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সর্বজনীন সমাধান তুলে ধরে, যাতে বিভিন্ন পক্ষের স্বার্থের সঙ্গতি বজায় থাকে। মধ্যপন্থা সাধারণত সহনশীলতা, উদারতা এবং অন্তর্ভুক্তির প্রতিফলন হিসেবে দেখা যায়।

 ‘দন্ড সমতা’ ও ‘ব্যবহার সমতা’ কি?

‘দন্ড সমতা’ এবং ‘ব্যবহার সমতা’ দুটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ধারণা।

দন্ড সমতা (Equality before the law) বলতে বোঝায় যে, সমাজের সব মানুষ, তাদের অবস্থান বা ক্ষমতা নির্বিশেষে, আইনের সামনে সমান। অর্থাৎ, সকল নাগরিককে সমান আইনি অধিকার এবং সুরক্ষা প্রদান করা হয়, এবং কোন ব্যক্তিকেই আইন থেকে বিশেষ সুবিধা বা অবজ্ঞা প্রদান করা উচিত নয়।

ব্যবহার সমতা (Equality of treatment) বলতে বোঝায় যে, একে অপরের প্রতি সমান এবং ন্যায্য আচরণ করা উচিত, যা বিভিন্ন সামাজিক বা আর্থিক অবস্থার মানুষদের মধ্যে সাদৃশ্য এবং সমান সুযোগ সৃষ্টি করে। এটি সমাজের মধ্যে মানবাধিকার এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

‘মহাযান’ সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।

মহাযান বৌদ্ধধর্মের একটি প্রধান শাখা, যা খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতাব্দী থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি প্রাথমিক হীনযান বৌদ্ধধর্ম থেকে উন্নত ও প্রসারিত হয়। মহাযান বৌদ্ধধর্মের মূল দৃষ্টিভঙ্গি হলো, সকল জীবের মুক্তি সাধন করা, এবং বুদ্ধত্ব অর্জন করার মাধ্যমে সবার কল্যাণ সাধন করা। এখানে বুদ্ধকে দেবতুল্য হিসেবে পূজা করা হয় এবং বোধিসত্ত্ব ধারণাটি গুরুত্বপূর্ণ, যা মানুষের প্রতি অসীম করুণা ও সহানুভূতি প্রদর্শন করে। মহাযান বৌদ্ধধর্মে প্রজ্ঞা, দয়া, এবং অমিতপরিসর সাধনা গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি এশিয়ার অনেক অঞ্চলে বিশেষ করে তিব্বত, চীন, কোরিয়া, এবং জাপানে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে।

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading