ক) ছিন্নপত্রের বেশিরভাগ চিঠিগুলি কাকে লেখা? তিনি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের কে হন? কত সালে চিঠিগুলি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়?
ANS- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ছিন্নপত্র গ্রন্থের বেশিরভাগ চিঠিই লেখা হয়েছিল ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীকে
- ১৮৮৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৮৯৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্দিরা দেবীকে ২৫২টি চিঠি লিখেছিলেন।
- ১৩১৯ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত ছিন্নপত্র গ্রন্থে ১৫২টি চিঠি সংকলিত ছিল।
- এর মধ্যে ১৪৩টি চিঠিই লেখা হয়েছিল ইন্দিরা দেবীকে।
(খ) ছিন্নপত্রের ১১ নং পত্রে কবির কী মনোভাব লক্ষ্য করা যায়?
ANS- ‘ছিন্নপত্র’-এর ১১ নম্বর পত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোভাব
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ছিন্নপত্র’ তাঁর জীবনের গভীর অনুভূতি, প্রকৃতির প্রতি তাঁর মুগ্ধতা, দার্শনিক চিন্তাভাবনা এবং মানবজীবনের বিচিত্র রূপ নিয়ে এক অনন্য সাহিত্যিক রচনা। ১১ নম্বর পত্র-এ রবীন্দ্রনাথের মনোভাব বিশেষভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও মানবজীবনের অন্তর্লীন তুচ্ছতা এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে প্রকাশ পায়।
(গ) শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘আত্মচরিত’ গ্রন্থের পরিচ্ছেদ সংখ্যা কয়টি? দুটি পরিচ্ছেদের নাম লেখো।
ANS- শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘আত্মচরিত’ গ্রন্থে মোট ১৯টি পরিচ্ছেদ রয়েছে।
দুটি পরিচ্ছেদের নাম:
১. প্রথম পরিচ্ছেদ: শৈশবকাল
২. পঞ্চম পরিচ্ছেদ: ব্রাহ্মসমাজে প্রবেশ
এই গ্রন্থে শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, সমাজ সংস্কার, ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলন এবং সমকালীন সমাজ-রাজনীতির কথা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।
(ঘ) ১৩ নং পত্রে বর্ণিত রবীন্দ্রনাথের মূল বক্তব্য অনধিক ছয়টি বাক্যে লেখো।
ANS- ‘ছিন্নপত্র’-এর ১৩ নম্বর পত্রে রবীন্দ্রনাথের মূল বক্তব্য:
১. কবি প্রকৃতির সৌন্দর্য ও নির্জনতার মধ্যে নিজেকে বিলীন করতে চান।
২. তিনি মনে করেন প্রকৃতির বিশালতা মানুষের অন্তর্গত ভাবনাকে গভীর ও বিস্তৃত করে।
৩. প্রকৃতির মধ্যে এক অবিনশ্বর শান্তি ও প্রশান্তি রয়েছে, যা মানুষের কোলাহলময় জীবনে অনুপস্থিত।
৪. মানবজীবনের ক্ষুদ্রতা ও প্রকৃতির মহিমার মধ্যে তিনি তীব্র বৈপরীত্য অনুভব করেন।
৫. প্রকৃতি কবির কাছে এক আশ্রয়স্থল, যেখানে তিনি সমস্ত দুঃখ ও ক্লান্তি ভুলে যান।
৬. এই পত্রে রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতির গভীরতা উপলব্ধি করে এক অন্তর্মুখী, দার্শনিক ভাবধারায় মগ্ন হন।
(ঙ) বিবেকানন্দ নানা সময়ে বিভিন্ন মানুষকে চিঠি লিখেছেন, তার মধ্যে অন্তত তিনজনের নাম লেখো।
ANS- স্বামী বিবেকানন্দ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষকে চিঠি লিখেছিলেন। তাঁর চিঠিপত্রগুলিতে ব্যক্তিত্ব, আদর্শ, এবং সমাজ সংস্কার সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি পাওয়া যায়।
তিনজন ব্যক্তি, যাঁদের স্বামী বিবেকানন্দ চিঠি লিখেছিলেন:
১. শ্রীমতি মেরি হেল (Sister Nivedita / মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল)
২. বাল গঙ্গাধর তিলক
৩. স্বামী ব্রহ্মানন্দ
এই চিঠিগুলিতে স্বামীজী ব্যক্তিগত শিক্ষা, দার্শনিক চিন্তা, এবং ভারতের পুনর্জাগরণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
(চ) শিবনাথ শাস্ত্রী ‘আত্মচরিত’ গ্রন্থের অনধিক ছ’টি বিশেষত্ব লেখো।
ANS- শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘আত্মচরিত’ গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ আত্মজীবনীমূলক রচনা। এর বিশেষত্বগুলি নিম্নরূপ:
১. ঐতিহাসিক দলিল:
- এই গ্রন্থে উনিশ শতকের বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি, এবং ব্রাহ্ম আন্দোলনের প্রামাণ্য চিত্র পাওয়া যায়।
২. ব্রাহ্ম আন্দোলনের বিবরণ:
- শিবনাথ শাস্ত্রী ব্রাহ্মসমাজের কার্যকলাপ, আন্দোলন এবং সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের ভূমিকা বিশদভাবে তুলে ধরেছেন।
৩. ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবন:
- লেখক তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সমকালীন সমাজের চিত্রও তুলে ধরেছেন।
৪. প্রাঞ্জল ভাষা ও সাবলীল বর্ণনা:
- বইটির ভাষা সহজ, প্রাঞ্জল এবং বর্ণনাভঙ্গি আকর্ষণীয়, যা পাঠকদের মনোযোগ ধরে রাখে।
৫. সমাজ সংস্কারের দৃষ্টিভঙ্গি:
- গ্রন্থে লেখক কুসংস্কার, নারীদের অবস্থান এবং সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতির বিরুদ্ধে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন।
৬. স্বীকারোক্তির সরলতা:
- শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর জীবনের সাফল্য ও ব্যর্থতা অকপটে স্বীকার করেছেন, যা বইটিকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
এই গ্রন্থ শুধু একটি আত্মজীবনী নয়, বরং এটি একটি মূল্যবান ঐতিহাসিক এবং সমাজতাত্ত্বিক নথি।