কামতা আন্দোলনের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টাকা লেখো। Write a short 1 note on Kamata Movement.

বিংশ শতকের একদম শেষের দিকে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলায় শুরু হয় একটি নতুন আন্দোলন ‘কামতাপুর আন্দোলন’। আন্দোলনের একদিকে ছিল ‘কামতাপুর পিপলস্ পার্টি (কে পি পি) নামক একটি রাজনৈতিক দল আর অন্যদিকে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কে এল ও) নামক একটি সন্ত্রাসবাদী সশস্ত্র বাহিনী। কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কে এল ও)- একটি সন্ত্রাসবাদী সশস্ত্র বাহিনী। রাজনৈতিক জনসভা ও পদযাত্রার মাধ্যমে আন্দোলনটি খুব শীঘ্রই ছড়িয়ে পড়েছিল ওই তিনটি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষদের পৃথক রাজ্যের দাবিকে কেন্দ্র করেই এই আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল। কামতাপুর নামক একটি পৃথক রাজ্য গঠন ছাড়াও আরও কিছু দাবি ছিল আন্দোলনকারীদের । তার মধ্যে অন্যতম ছিল কামতাপুর ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি।

রাজবংশী মানুষেরা মনে করেন সে কোচ-রাজবংশী জাতি বাঙালি বা বাংলা ভাষাভাষী কোনো জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং নৃতাত্ত্বিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে সম্পন্ন একটি পৃথক জাতি। এই সকল যুক্তির ওপরে ভিত্তি করেই পৃথক রাজ্যে গঠনের দাবিতে সরব হয়েছিল কে পিপি। সঙ্গে ছিল কামতাপুর ভাষা সাহিত্য পরিষদের মতো আরও কিছু গণতান্ত্রিক সংগঠন। অপরদিকে এই অঞ্চলের ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক অবস্থানের সুযোগ নিয়ে জঙ্গি হামলা চালাচ্ছিল কে এল ও। পরবর্তীকালে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই কিছুটা  হেরফের ঘটেছিল এই সংগঠনগুলির মধ্যে। তৈরি হয় আরও কিছু নতুন দল কিন্তু মূল দাবিগুলিও প্রায় একই ধরনের ছিল। কামতাপুর আন্দোলনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল নতুন ইতিহাস রচনা। কামতাপুর আন্দোলনকারীরা এবং তাদের সমর্থকেরা রাজবংশী জাতির নতুন ইতিহাস রচনা করলেন। আন্দোলনটি যেমনভাবে রমরমিয়ে জনসমক্ষে উঠে এসেছিল, তেমনভাবে স্থায়িত্ব বজায় রাখতে পারেনি। 1990-এর দশকের শেষে কামতাপুর নামে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তবে আন্দোলনটি যেটি করতে পেরেছিল, তা হল রাজবংশী সম্পর্কিত জন আলোচনা এবং তার সঙ্গে কিছু নতুন ভাবনা ও নতুন সুযোগ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

en_USEnglish
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading