মানব পরিবারের সকল সদস্যের সার্বজনীন, সহজাত, অহস্তান্তরযোগ্য এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকারই হলো মানবাধিকার। দুর্গাদাস বসুর মতে, মানবাধিকার হল সেইসব অধিকার যা কোন প্রকার বিবেচনা নির্বিশেষে মনুষ্য পরিবারের সদস্য হিসেবে ব্যক্তি মানুষ রাষ্ট্র বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভোগ করে থাকে। রাফেল এর মতে, মানবাধিকার হল সেইসব বিশেষ অধিকার যেগুলি কেউ মানুষ হওয়ার সুবাদে ভোগ করে । জাতিপুঞ্জের মানবাধিকার কেন্দ্রের প্রদত্ত সংজ্ঞায় বলা হয়, মানবাধিকার হল সেই সকল অধিকার যেগুলি আমাদের প্রকৃতির মধ্যে সহজাত এবং যেগুলি ছাড়া আমরা মানুষ হিসেবে বাঁচতে পারিনা।
মানবাধিকারের প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যঃ
মানবাধিকারের উপরিউক্ত সংজ্ঞার পরিপ্রক্ষিতে এর নিম্নলিখিত প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করা যেতে পারে। যেমন-
i) সর্বজনীন অধিকারঃ মানবাধিকার হল সর্বজনীন অধিকার। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ১৯৪৮ সালের বিশ্ব ঘোষণা পত্রে মানবাধিকারকে সর্বজনীন অধিকার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলে সর্বত্রই মানবাধিকার ভোগ করতে পারে।
ii) সহজাত অধিকারঃ মানবাধিকার হল সহজাত অধিকার। কারন মানুষ জন্মানোর সাথে সাথেই এই অধিকার ভোগের অধিকারী। রাষ্ট্র বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ মানুষকে যেমন এই অধিকার দেয়না তেমনি মানুষকেও কোনো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই অধিকারের দাবী জানাতে হয়না।
iii) অহস্তান্তরযোগ্য অধিকারঃ মানবাধিকার হল অহস্তান্তরযোগ্য অধিকার। কারণ মানবাধিকারকে হস্তান্তরিত করা যায়না। প্রতিটি মানুষ রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজ নিজ মানবাধিকার ভোগ করে থাকে।
iv) অলঙ্ঘনীয় অধিকারঃ মানবাধিকার হল অলঙ্ঘনীয় অধিকার। কারন যেহেতু মানবাধিকারকে কেউ দেয়না এবং মানুষ জন্মগতভাবেই তা লাভ করে থাকে সেহেতু রাষ্ট্র বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ মানবাধিকারকে
v) মানবাধিকার কমিশনঃ মানবাধিকার বাস্তবায়নে মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা থাকে। এজন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন। এছাড়া ভারতে জাতীয় স্তরে রয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য স্তরে রয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।