অথবা, ‘রাজতরঙ্গিনী’র ঐতিহাসিক গুরুত্ব লেখো।
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে আঞ্চলিক ইতিবৃত্তগুলি দারুণভাবে সাহায্য করে। এগুলির মধ্যে অন্যতম হল কাশ্মীরি পণ্ডিত কলহনের লেখা ‘রাজতরঙ্গিনী’ গ্রন্থটি। তিনি 1150 সালে গ্রন্থটি লেখা শেষ করেন। এই গ্রন্থ লিখতে গিয়ে তিনি রাজাদের মন্দির প্রতিষ্ঠার শাসনপত্র, দানপত্র, প্রশস্তিপত্র পরীক্ষা করে দেখেছেন এবংপ্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদান
এর পাশাপাশি অলৌকিক জনশ্রুতি, পুরাণবর্ণিত আখ্যান প্রভৃতির সাহায্য নিয়েছেন। ঐতিহাসিক কলহন ‘রাজতরঙ্গিনী’ লিখতে গিয়ে নিরপেক্ষ ঐতিহাসিকের আদর্শ অনুসরণ করেছেন। যেমন-তিনি কাশ্মীরের মানুষ হয়েও কাশ্মীর রাজ ললিতাদিত্য মুক্তপীড়ের মুক্তকণ্ঠে সমালোচনা করেছেন। তাঁর এই নিরপেক্ষ দৃষ্টিভলি প্রকৃতপক্ষে আধুনিককালের কথা এবং সেই মাপকাঠিতে প্রাচীনকালের কোনো রচনাকেই প্রকৃত ইতিহাসের মর্যাদা দেওয়া যায় না একমাত্র রাজতরঙ্গিনী ছাড়া। রামশরণ শর্মা-র মতে, প্রারম্ভিক ইতিহাস রচনার সর্বোৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত রাজতরঙ্গিনী (নৃপতির ধারা), যার মূল আলোচ্য বিষয় ‘কাশ্মীর রাজাদের চরিত্র’ হলেও মধ্যযুগের প্রথম পর্যায়ের সামাজিক সংগঠন ও ভূমিব্যবস্থার পরিবর্তনের বিবরণ এই গ্রন্থে পাওয়া যায়।