প্রাচীনকালে বহু বিদেশি, যেমন-গ্রিক, রোমান, চৈনিক, তিব্বতীয় ও মুসলিমরা ভারতে আসেন এবং ভারত সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা তাঁরা লিপিবন্ধ করেন, যা ইতিহাসের উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের সাহিত্যিক উপাদান:
গ্রিক বিবরণ:
গ্রিক লেখকদের মধ্যে সর্বপ্রথম গ্রিক ঐতিহাসিক ও ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস-এর রচনা থেকে ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পারসিক বিজয়ের কথা জানা যায়। গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের বিবরণ পাওয়া যায় গ্রিক বিবরণ থেকে। তবে গ্রিক লেখকদের মধ্যে ‘ইন্ডিকা’ গ্রন্থের লেখক মেগাস্থিনিস বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাঁর রচনা থেকে মৌর্য সাম্রাজ্য ও সমকালীন ভারতের বহু মূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া পলিবিয়াস রচিত ‘পেরিপ্লাস অব দ্য এরিথ্রিয়ান সি’, টলেমি রচিত ‘ভূগোল’, প্লিনি রচিত ‘প্রাকৃতিক ইতিহাস’ থেকে ভারত ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাওয়া যায়।
চিনা ও তিব্বতীয় বিবরণ:
চিনা ও তিব্বতীয় বিবরণ ফা-হিয়েন রচিত ‘ফো-কুও-কি’, হিউয়েন সাঙ রচিত ‘সি-ইউ-কি’, ইৎ-সিং-এর বিবরণী, তিব্বতীয় পণ্ডিত লামা তারানাথ রচিত ‘ভারতে বৌদ্ধধর্মের জন্ম’ শীর্ষক গ্রন্থ থেকে ভারতে শক, পল্লব, কুষাণ ও গুপ্ত যুগের ইতিহাসের নানা অজানা তথ্য জানা যায়।
আরবীয় বিবরণ:
মুসলিম ঐতিহাসিকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন অলবেরুনি। তিনি সুলতান মামুদের সঙ্গে ভারতে আসেন এবং দীর্ঘকাল ভারতে বসবাস করে ভারতীয় ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান ও সাহিত্য সম্পর্কে অনুশীলন করেন এবং 1030 খ্রিস্টাব্দে ‘কিতাব-উল-হিন্দ’ নামক গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যা থেকে সমকালীন ক্ষয়িষু ভারতের সমাজ ও ধর্মের এক জীবন্ত চিত্র ফুটে উঠেছে।