বিদ্যাসাগর ছদ্মনামে বেশ কয়েকটি গ্রন্থ লেখেন। ‘কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপোস্য’ ছদ্মনামে লেখেন ‘অতি অল্প হইল’, ‘আবার অতি অল্প হইল’ ও ‘ব্রজবিলাস’। ‘কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপো সহচরস্য’ ছদ্মনামে লেখেন ‘রত্নপরীক্ষা’ গ্রন্থ।
বাংলা গদ্য প্রথম সুসংহত, সুপরিণত ও ও সহজ গতিময়তায় চলতে শুরু করেছিল বিদ্যাসাগরের হাতে। তিনি প্রথম বাংলা গদ্যের যথার্থ শিল্পী। বাংলা গদ্যকে সুশৃঙ্খল রূপ দিতে তিনিই প্রথম যাত্রা শুরু করেছিলেন। এজন্যেই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন-“বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী ছিলেন। তৎপূর্বে বাংলায় গদ্য সাহিত্যের সূচনা হইয়াছিল, কিন্তু তিনিই সর্বপ্রথমে বাংলা গদ্যে কলা-নৈপুণ্যের অবতারণা করেন।”
বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের বিবিধ রূপনির্মিতি নিয়ে অগ্রসর হতে হয়েছিল। ফলে বিদ্যাসাগরের রচনাকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়-অনুবাদমূলক রচনা, মৌলিক রচনা, সমাজসংস্কারমূলক রচনা, শিক্ষামূলক রচনা ও লঘু রচনা। বিদ্যাসাগর যখন সাহিত্যে এলেন তখন বাংলা গদ্যের তেমন কোনো নিদর্শন নেই। ফলে বিদ্যাসাগরকে অনুবাদমূলক রচনায় হাত দিতে হয়। বিদ্যাসাগর একে একে অনুবাদ করতে থাকেন-কালিদাসের ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম্’ থেকে ‘…
গদ্যভাষার উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সুশৃঙ্খল, সুবিভক্ত, সুবিন্যস্ত, সুপরিচ্ছন্ন এবং সুসংযত করিয়া তাহাকে সহজ গতি ও কার্যাকুশলতা দান করিয়াছেন।”