লয় কাকে বলে?
কবিতা বা গানের উচ্চারণে শব্দের সঞ্চালনের গতি বা প্রবাহকে লয় বলে। এটি মূলত ছন্দের গতি নির্ধারণ করে এবং কবিতার আবেগ ও অর্থ প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লয় ছন্দের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য ও সুষমা বৃদ্ধি করে।
বাংলা কবিতায় ছন্দের ধরন অনুসারে লয়ের ব্যবহার বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ছন্দ এবং তাদের সঙ্গে ব্যবহৃত লয়ের সম্পর্ক তুলে ধরা হলো:
১. বিলম্বিত লয়
- ছন্দের ধরন: মন্দাক্রান্তা, শিখরিণী, বসন্ততিলকা।
- বিশেষত্ব: গতি ধীর এবং মৃদু; ভাবগম্ভীর ও গভীর আবেগ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়।
- উদাহরণ:
মন্দাক্রান্তা ছন্দ
“উদার শারদ আকাশ গগনে গগনে,
হেরি বিমল মধু মেঘে খেলা করে।“
২. মধ্য লয়
- ছন্দের ধরন: উপজাতি, ইন্দ্রবজ্রা, বাঙালক্ষ্মী।
- বিশেষত্ব: গতি মাঝারি; আবেগ ও ভাবের ভারসাম্য বজায় রাখতে উপযুক্ত।
- উদাহরণ:
উপজাতি ছন্দ
“তোমার ওই গগন তলে,
ফুটেছে ফুল দলে দলে।“
লয়ের সঠিক ব্যবহার
কবির ভাবের প্রকাশ এবং কবিতার বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে ছন্দে লয়ের ধরণ নির্বাচন করা হয়। গম্ভীর ও শোকাবহ আবেগের ক্ষেত্রে বিলম্বিত লয়, স্নিগ্ধ ও মধ্যম আবেগের ক্ষেত্রে মধ্য লয় এবং উদ্দীপনা ও গতিময় আবেগের ক্ষেত্রে দ্রুত লয় অধিক কার্যকর।