সামাজিক নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব-
সামাজিক নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব যেকোনো সমাজে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রযোজ্য হবে কি না বা তা সর্বজনগ্রাহ্যতা পাবার বিষয়টি কতকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল।
* প্রথমত, পারস্পরিক সম্পর্ক: সামাজিক নিয়ন্ত্রণ যাঁরা কার্যকর করেন এবং যাঁরা নিয়ন্ত্রিত হন উভয়ের মধ্যেকার সম্পর্কের গভীরতার উপর এর সাফল্য নির্ভরশীল। সম্পর্ক আন্তরিক হলে নিয়ন্ত্রণ কার্যকর হয়। সম্পর্কে তিক্ততা থাকলে নিয়ন্ত্রণ কার্যকর হয় না। উদাহরণ হিসাবে বাবা-মায়ের সঙ্গে ছেলে-মেয়ের সম্পর্কের উল্লেখ করা যায়।
* দ্বিতীয়ত, শিক্ষার প্রসারতা সমাজে যদি শিক্ষার অসম বিন্যাস ঘটে সেক্ষেত্রে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ কার্যকর না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এক্ষেত্রে আনুগত্যের পরিবর্তে ছড়ায় বিভ্রান্তি। সমাজকে উপেক্ষা করার প্রবণতা এক্ষেত্রে প্রবল হয়। এতে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
* তৃতীয়ত, সামাজিক সংহতি সমাজ ব্যবস্থা সুসংহত হলে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ অধিক কার্যকর হয়। সমাজে সংহতি বিরাজ করলে নিয়ন্ত্রণের পথ নিয়ে কোনো দ্বিধা তৈরি হয় না। সুসংহত সমাজে নাগরিকদের সামাজিক বিধির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের প্রবণতা চোখে পড়ে। উদাহরণ হিসাবে গ্রামের ছোটো সমাজের উল্লেখ করা যায়, যদিও শহুরে সমাজ জটিল প্রকৃতির।
* চতুর্থত, গণতান্ত্রিক প্রকৃতি: নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি গণতন্ত্রসম্মত হলে ভয় থাকে না। সকলে যদি স্বাধীনভাবে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে পারে সেক্ষেত্রে ক্ষোভের জায়গা তৈরি হয় না। তবে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ যদি গণতান্ত্রিক না হয়, সেক্ষেত্রে বিতর্কের। ভয়টা থেকেই যায়। সমাজে বসবাসকারী সকলে সেই নিয়ন্ত্রণ না-ও মানতে পারে।
* পঞ্চমত, মানুষের চরিত্র সমাজবন্ধ মানুষের চরিত্র কোনো কোনো ক্ষেত্রে সামাজিক নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে। জনমতের চাপ ও শাস্তির কঠোরতায় সামাজিক নিয়ন্ত্রণ অধিক কার্যকর হয়। জনমতের চাপ অবশ্য সবার উপর সমান প্রভাব ফেলে না। জেদি প্রকৃতির মানুষের ক্ষেত্রে সামাজিক নিয়ামক সেভাবে সক্রিয় হয় না। আবেগপ্রবণ হলে নিয়ন্ত্রণ অধিক কার্যকর হয়।