সিন্ধু সভ্যতার মানুষের ধর্মীয় জীবন

হরপ্পা সভ্যতা বা সিন্ধু সভ্যতার মানুষের ধর্মীয় জীবন –

হরপ্পা সভ্যতায় প্রাপ্ত বিভিন্ন মূর্তি, সিলমোহর প্রভৃতি থেকে সেযুগের মানুষের ধর্মীয় জীবনের পরিচয় পাওয়া যায়।

প্রকৃতিপূজা ঃ হরপ্পায় প্রাপ্ত বিভিন্ন ধ্বংসাবশেষ থেকে অনুমান করা হয় যে, সেযুগের মানুষ প্রকৃতির পূজা করত। তারা জল, আগুন, নদী, আকাশ প্রভৃতিকে দেবতাজ্ঞানে পূজা করত। বিভিন্ন সিলমোহর থেকে ধারণ করা হয় সিন্ধুবাসীরা ষাঁড়, হাতি, বাঘ, মহিষ প্রভৃতি পশুর পূজা করতো।

মূর্তিপূজা ঃ অনেকের মতে সিন্ধু সভ্যতার যুগে মূর্তিপূজার প্রচলন ছিল। হরপ্পায় অনেক মাটির তৈরি নারী মূর্তি পাওয়া গেছে। আবার নরবলি চিহ্নিত একটি সিল থেকে মনে করা হয় সেযুগে নরবলির প্রচলন ছিল। সিন্ধু সভ্যতার একটি সিলমোহরে ধ্যানমগ্ন এক দেবমূর্তি পাওয়া গেছে যার তিনটি মুখ ও মাথায় দুটি শিং আছে। অনেকের মতে, এটি হলো আদিশিবের মূর্তি। এছাড়া বিভিন্ন নিদর্শন থেকে বলা যায় হরপ্পা সভ্যতার মানুষ টোটেম বা প্রতীকপূজা করত।

উপাসনাগৃহ ঃ সিন্ধু সভ্যতায় মন্দিরের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায় না। খনন কার্যের ফলে প্রাপ্ত কয়েকটি অট্টালিকাকে অনেকে মন্দির বলে মনে করেন। ঐতিহাসিক রামশরণ শর্মার মতে, হরপ্পার সমাজে মন্দির বা পুরোহিত ছিল না। তবে সেযুগে মানুষ ভূত, প্রেত ও অশুভ শক্তিতে বিশ্বাস করতো।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ঃ এই সময় মানুষ মৃতদেহকে কবর দিত, তবে এক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে কবর দেওয়ার সঙ্গে মৃত ব্যক্তির ব্যবহার্য বিভিন্ন সামগ্রী রাখা হতো। আবার কোথাও শুধু মৃতদেহকে কবর দেওয়া হতো। তেমনি কোন স্থানে মৃতদেহকে দাহ করে তার ভস্ম কবর দেওয়া হতো। সিন্ধুবাসীর কবর দানের পদ্ধতি বিশ্লেষণ করে অনেকে বলেন, সিন্ধুবাসীরা পরজন্মে বিশ্বাসী ছিল।

en_USEnglish
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading