‘কপালকুণ্ডলা’ উপন্যাসের ঐতিহাসিক দিকটি আলোচনার জন্য উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট, চরিত্র ও ঘটনাগুলি ভালোভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’ ১৮৬৬ সালে প্রকাশিত হয়, যা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে। এই উপন্যাসটি প্রধানত একটি রোমান্টিক উপন্যাস হলেও, এতে কিছু ঐতিহাসিক উপাদানও বিদ্যমান।
উপন্যাসটিতে মূলত বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর নিজস্ব শৈলী ও কল্পনা ব্যবহার করে একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন। এই উপন্যাসটি শুধুমাত্র একটি প্রেমের গল্প নয়, বরং এতে কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা ও চরিত্রও স্থান পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উপন্যাসের প্রেক্ষাপট হিসাবে, বঙ্কিমচন্দ্র একটি প্রাচীনকালের রাজকীয় পরিবেশের চিত্র তুলে ধরেছেন। এই প্রেক্ষাপটটি উপন্যাসটির ঐতিহাসিক উপাদান তৈরি করেছে।
উপন্যাসটিতে ঐতিহাসিক দিকগুলির মধ্যে অন্যতম হলো, কপালকুণ্ডলার চরিত্রের জন্ম এবং তার পরিবারের সাথে সম্পর্কিত কিছু ঘটনা। কপালকুণ্ডলার জন্ম একটি প্রাচীন রাজবংশের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা উপন্যাসটিকে একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে স্থাপন করে। এছাড়াও, উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্র, যেমন – নবকুমার, পুরোহিত, এবং অন্যান্য চরিত্রগুলির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও উল্লেখযোগ্য।
এই উপন্যাসটিতে বঙ্কিমচন্দ্র বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন, যা উপন্যাসটিকে শুধুমাত্র একটি রোমান্টিক গল্প থেকে একটি ঐতিহাসিক উপন্যাসের দিকে নিয়ে গেছে। এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উপন্যাসটিকে আরও গভীর ও অর্থপূর্ণ করে তুলেছে। বঙ্কিমচন্দ্র ‘কপালকুণ্ডলা’ উপন্যাসের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে একটি নতুন দিগন্ত উপহার দিয়েছেন।