অথবা, এলাহাবাদ প্রশস্তির ঐতিহাসিক গুরুত্ব আলোচনা করো।
লেখমালা প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার একটি উৎকৃষ্ট উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। বস্তুত প্রাচীন ভারতের লুপ্ত ইতিহাস যতটা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে তার বেশিরভাগের জন্য আমরা লেখমালার কাছে ঋণী। এমনই একটি অন্যতম লেখমালা হল ‘এলাহাবাদ প্রশক্তি’। এটি রচনা করেন গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি হরিষেণ। এর কিছু অংশ ভেঙে গেলেও সংস্কৃত ভাষায় রচিত ১৩ লাইনের এই প্রশস্তিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এর থেকে সমুদ্রগুপ্তের দিগ্বিজয়ের কথা তথা দক্ষিণ ভারতের 12টি রাজাকে পরাজিত করে তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার কথা, উত্তর ভারতে এটি রাজাকে পরাজিত করার কথা, সীমান্তবর্তী এলাকায় ৩টি আটবিক রাজ্যকে পরাজিত করার কথা ইত্যাদি জানা যায়। শুধু তাই নয়, এই প্রশস্তি থেকে গুপ্তযুগের তৎকালীন ভারতের রাজনৈতিক চিত্রও প্রতিভাত হয়ে ওঠে। মধ্যভারত ও রাজস্থানের বিস্তীর্ণ এলাকায় তখন প্রজাতান্ত্রিক উপজাতীয় শাসন বলবৎ ছিল এবং গুপ্ত সাম্রাজ্যবাদের আঘাতে, তা ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল তা এই প্রশস্তি থেকে বোঝা সম্ভবপর হয়। এ ছাড়া এই প্রশস্তি থেকে হরিষেণের কবিপ্রতিভা, সাহিত্যগুণ, সংস্কৃত ভাষায় উৎকর্ষতা প্রভৃতি ফুটে উঠেছে।