জাতি-ধর্ম-বর্ণ পার্থক্যে সরকার স্বীকৃত ও সরকার পরিচালিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোনো ব্যক্তিকে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এটি হল শিক্ষার সমসুযোগ এর ধারণা। অর্থাৎ যে কোনো ধর্ম সম্প্রদায়ের ব্যাক্তি যে কোনো সরকারি শিক্ষালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবে, সাংবিধানিক ভাবে এতে তার অধিকার।
শিক্ষায় সমসুযোগ সম্পর্কে ধারণা :
শিক্ষায় সমসুযোগ কথাটি শুধু শিক্ষার সাথে জড়িত নই, কথাটি আমাদের মহান দেশ ভারত বর্ষের সাথেও জড়িত। ভারতের সংবিধানে শিক্ষা বিষয়টিকে সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে রাখা হয়েছে। আমাদের দেশ বৈচিত্রে ভরপুর, সেই কারণে নানা জাতির মানুষেরা বসবাস করে কোনো কারণে যাতে এই সকল মানুষেরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয় তার জন্য ভারতের সঙ্গেবিধানে শিক্ষার সমতা বিধানের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সরকার অনুদান কৃত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার ব্যাপারে জাতি, ধর্ম, ও বর্ণের এমন কি লিঙ্গের পার্থক্য থাকা চলবে না, কারণ এই সকল বিষয় জাতির অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করে। শিক্ষা ক্ষেত্রে সমতা বিধানের জন্য নানা সময় শিক্ষা কমিশন গুলি নানান পরিকল্পনা করে সেই সকল অন্ধকার কুসংস্কার কে দূর করার চেষ্টা করেছে, যা সমতা বিধানের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
আমাদের দেশ উন্নয়ন শীল দেশ, এই কারণে সকল স্থানে এখনও সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন রূপ পায়নি। এখনো আমাদের দেশে অনেক সমস্যা আছে যা শিক্ষার ক্ষেত্রে সমতা রক্ষার বাধা সৃষ্টি করে থাকে। এই সকল বাধা কে দূরীকরণ করার জন্য কয়েক্তি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যেমন -
- জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীকে সমান সুযোগ দানের মর্যাদা দিতে হবে, এবং তার জন্য সার্বিক প্রচেষ্টা করতে হবে।
- সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে “বুক ব্যাংক” স্থাপন করতে হবে।
- শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতিভেদ প্রথার কুফল বা কুসংস্কার গুলি তুলে ধরতে হবে , যাতে তাদের মধ্যে এই ধরনের আচরণ গড়ে না ওঠে।
- সমস্ত বেসরকারি, বা সরকারি বিদ্যালয় গুলিতে নিম্ন প্রাথমিক বা প্রাথমিক স্তরের বেতন নেওয়া বন্ধ করতে হবে।
- বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ এর ব্যাবস্থা করতে হবে।
- শিক্ষার্থীদের, অভিভাবক দের সংবিধান সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে, যাতে মানসিক কুসংস্কার গুলি দূর হয়।
- সমাজের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যাবস্থা করে তাদের শিক্ষার আঙ্গিনায় তুলে আনতে হবে।
- শিক্ষা কেন্দ্র থেকে বাড়ির দূরত্ব হিসাব করে বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।
- ভারতীয় শিক্ষা কমিশন শিক্ষার সমতা বিধান সম্পর্কে এক বিশেষ ধরনের বিদ্যালয়ের কথা বলেছেন, যা কমন স্কুল নামে পরিচিত।