সামাজিক নিয়ন্ত্রণে ধর্মের ভূমিকা: আমরা যা ধারণ করি তা-ই ধর্ম বলে বিবেচিত হয়। প্রাচীনকাল হতে মানুষ কিছু বিশ্বাস ও ধারণা পোষণ করে আসছে। এই বিশ্বাসগুলো অনেকসময় ধর্ম বলে বিবেচিত হয়। আবার অনেকে মনে করেন, এ জগতের কারণ হিসেবে অতিপ্রাকৃতিক শক্তিতে বিশ্বাসই মূলত ধর্ম বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। ধর্মের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকার নৈতিক অনুশাসন ও সামাজিক বিধি ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। ধর্ম মানুষের আচরণকে সংযত করে। ধর্ম সামাজিক নীতিকে মেনে চলার জন্য স্বাভাবিক প্রবণতা সৃষ্টি করে
থাকে। প্রাচীনকালে ধর্মের কার্যকারিতা ছিল অতিমাত্রায় ক্রিয়াশীল। ব্যক্তিজীবনের সকল দিক যেমন-জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, শিক্ষা, জীবিকার্জন, আচার-আচরণ সব ক্ষেত্রেই ধর্মের প্রভাব খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রভাবশালীগণ এই প্রত্যয়কে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের অন্যতম বাহন হিসেবে ব্যবহার করেছেন। শুধু তাই নয়, সামাজিক নিয়মনীতির উদ্ভব ঘটে সাধারণত ধর্মের ভিত্তিতে। মানুষের চিন্তা, চেতনা ও কাজকর্মকে ধর্ম যুক্তিপূর্ণ ও কার্যকর করে তুলতে সাহায্য করে। সামাজিক মূল্যবোধ স্বীকৃতি লাভ করে ধর্মীয় বোধের দ্বারা। এই সামাজিক মূল্যবোধ ব্যক্তির মধ্যে ব্যক্তিরস্বার্থের দ্বন্দুকে অনেকাংশে সংযত ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এছাড়াও ধর্ম সামাজিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সামাজিক সংহতি দৃঢ় করে তোলে। ধর্মীয় চেতনা সমাজে না থাকলে সমাজে সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলা এবং তা সামাজিক সংহতি বিনষ্ট করে। তাই বলা যায়, ধর্ম সামাজিক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।