ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কিভাবে দেওয়ানী লাভ করে? এর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব কী ছিল? 

Table of Contents

ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দেওয়ানি লাভ:

ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (East India Company) ১৭৬৫ সালে মুঘল সম্রাট শাহ আলম II-এর কাছ থেকে বাংলার দেওয়ানি (রাজস্ব সংগ্রহের অধিকার) লাভ করে। এটি ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দেওয়ানি লাভের মধ্য দিয়ে কোম্পানি প্রথমবারের মতো একটি অঞ্চলের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। বাংলার দেওয়ানি লাভের পেছনে পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) এবং বক্সারের যুদ্ধ (১৭৬৪) ছিল প্রধান কারণ। এই প্রবন্ধে দেওয়ানি লাভের পদ্ধতি, এর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিপ্রভাব,এবংবং এর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করা হবে।

দেওয়ানি লাভের প্রেক্ষাপট

১. পলাশীর যুদ্ধ৭৭৭(১৭৫৭)

পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করার মাধ্যমে কোম্পানি বাংলায় তাদের প্রভাব বিস্তার করে। যদিও এই যুদ্ধে মূলত বিরুদ্চনা করে।

২. বক্সারের যুদ্ধ৭৬৪ (১৭৬৪)

১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মুঘল সম্রাট শাহ আলম II, বাংলার নবাব শুজাউদ্দৌলার সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করে। এই যুদ্ধ কোম্পানির সামরিক ও কূটনৈতিক শক্তিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে।

৩. আলাহাবাদ চুক্তি (১৭৬৫)

বক্সারের যুদ্ধের পর আলাহাবাদ চুক্তির মাধ্যমে মুঘল সম্রাট শাহ আলম II বাংলার দেওয়ানি অধিকার কোম্পানির কাছে অর্পণ করেন। এর বিনিময়ে, ত�ফিরিয়ে দেয়।

দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে কোম্পানির ক্ষমতা

দেওয়ানি লাভের ফলে কোম্পানি বাংলার প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক দায়িত্ব পায়। এর মাধ্যমে তারা:

  1. রাজস্ব সংগ্রহের অধিকার অর্জন করে, যা সরাসরি তাদের অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
  2. ন্যায়বিচারের ক্ষমতা লাভ করে, অর্থাৎ দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে নাগরিক মামলার বিচার করার অধিকার।
  3. প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলার নবাবের হাতে ছিল।

দেওয়ানি লাভের রা১.ভারতেভাব

১. ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন

দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে। এটি ভারতের অন্য অংশে ব্রিটিশ আভির ভিত্তি তৈরি করে।

২. নবাবদের ক্ষমতা হ্রাস

বাংলার নবাবেরা কেবল নামমাত্র শাসকে পরিণত হন। নবাবদের সামরিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা কার্যত কোম্পানির৩.মুঘললে যায়।

৩. মুঘল সম্রাটের অধিকার ক্ষয়

মুঘল সম্রাট শাহ আলম II দিল্লিতে থাকলেও তার কার্যকর ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। দেওয়ানি প্রদান করার মাধ্যমে তিনি কোম্পানির প্রমেনে নিতে বাধ্য হন।

৪. ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার কৌশলগত ধাপ

কোম্পানি বাংলায় প্রশাসনিক এবং রাজস্ব সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার পর ভারতের অন্যান্য অংশে সামরিক অভিঅঞ্চলেলের সম্পদ ব্যবহার করে।

৫. স্থানীয় প্রশাসন দুর্বলকরণ

ব্রিটিশরা স্থানীয় প্রশাসনিক কাঠামো ধ্বংস করে তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা চাপিয়ে দেয়। এটি স্থানীয় জমিদার ও ব্যবসার রাজনৈতিক শক্তি হ্রাস করে।

অর্থনৈতিক প্রভাব

১. রাজস্ব ব্যবস্থার পরিবর্তন

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেওয়ানি পাওয়ার পর রাজস্ব ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনে।

  • নয়া রাজস্বনীতি: কোম্পানি একটি স্থায়ী জমিদারি ব্যবস্থা প্রবর্তন করে, যেখানে জমিদারদের কাছ থেকে পূর্বনির্ধারিত রাজস্ব আদায় করা হতো।
  • বর্ধিত কর: কৃষকদের উপর করের বোঝা অনেক বেড়ে যায়, যা গ্রামীণ অর্থনীতি ধ্বংস করে।

২. বাংলার অর্থনীতির ক্ষতি

কোম্পানি রাজস্ব সংগ্রএরফলেতা ব্রিটেনে পাঠাতে শুরু করে। এর ফলে বাংলার অর্থনীতিতে অর্থের ঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্যের সূচনা হয়।

৩. কারুশিল্পের পতন

  • ব্রিটিশদের পৃষ্ঠপোষকতায় ম্যানচেস্টারের তৈরি বস্ত্র বাংলায় আমদানি হওয়ায় স্থানীয় তাঁতশিল্প ধ্বংস হয়ে যায়।
  • বাণিজ্যিক নীতি বাংলার কারিগরদের প্রতিযোগিতায় অসম করে তোলে।

৪. ভূমির ব্যবস্থার অবনতি

অতিরিক্ত কর আদায়ের ফলে কৃষকরা ঋণগ্রস্তযায় পড়ে। তারা জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়, যা কৃষির উৎপাদনশীলতাকে প্রভাবিত করে।

৫. ক্ষুদ্রবাণিজ্যেরফলে ক্ষতি

ব্রিটিশদের মনোপলি বাণিজ্যের ফলে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতার মুলাভেরদীর্ঘমেয়াদি আয় কমে যায়।

দেওয়ানি লাভের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব

. ঔপনিবেশিক অর্থনীতির ভিত্তি

দেওয়ানি লাভের মাধ্যমে ভারতীয় সম্পদ শোষণ শুরু হয়, যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত্তি হয়ে ওঠে।

. রাজনৈতিক একচেটিয়াকরণ

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ক্রমাগত ভারতের বিভিন্ন অংশে সামরিক অভিযান চালিয়ে তাদের শাসন প্রসারিত করে।

. বাঙালির সামাজিক অবক্ষয়

রাজস্ব ও বাণিজ্যিক নীতির ফলে বাংলার কৃষক, কারিগর এবং ছোট ব্যবসায়ীরা দারিদ্র্যের শিকার হয়।

. স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তি

শোষণমূলক ব্যবস্থার কারণে বাংলায় ক্রমাগত জনসাধারণের অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়, যা পরে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

উপসংহার

১৭৬৫ সালে দেওয়ানি লাভ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য একটি কৌশলগত বিজয় ছিল, যা ভাপরিগ�দ্ধে দীর্ঘমেয়াদি অসন্তোষ ও স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করে।

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading