উদাহরণসহ সাধু ও চলিত গদ্যরীতির পার্থক্য আলোচনা করো।

Table of Contents

উদাহরণসহ সাধু ও চলিত গদ্যরীতির পার্থক্য-

সাধুচলিত গদ্যরীতির মধ্যে পার্থক্য বাংলা ভাষার গদ্য শৈলীতে স্পষ্টভাবে লক্ষণীয়। এগুলি সাধারণত সাহিত্য এবং দৈনন্দিন লেখায় ব্যবহৃত হয়। এখানে পার্থক্যগুলি উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো:

১. ভাষার শুদ্ধতা ও মর্যাদা

সাধু গদ্যরীতি:
সাধু গদ্যরীতি বাংলা সাহিত্যে শুদ্ধ এবং আভিজাত্যপূর্ণ ভাষার প্রয়োগ করে। এটি মূলত শাস্ত্রীয় এবং সাহিত্যিক কাজে ব্যবহৃত হয়। সাধু ভাষা অধিক শুদ্ধ, পরিশুদ্ধ এবং সংস্কৃত প্রভাবিত।

উদাহরণ:

  • সাধু গদ্য:
    “অসীম সুন্দরী, ঈশ্বরের পূর্ণমুখের কথা শুনেছি, সেইজন্য আমি কৃতজ্ঞ।”

চলিত গদ্যরীতি:

চলিত গদ্যরীতি সাধারণ জীবনযাপনের ভাষা। এটি সহজ, স্বাভাবিক এবং প্রতিদিনের কথোপকথনের মতো। চলিত ভাষা বাংলা ভাষার প্রাকৃতিক ও আধুনিক রূপ।

উদাহরণ:

  • চলিত গদ্য:
    “অনেক সুন্দর, আমি ঈশ্বরের কথা শুনে খুব খুশি।”

২. শব্দ নির্বাচন ও বাক্যগঠন

সাধু গদ্যরীতি:
এতে সাধারণত উচ্চাঙ্গ ভাষার শব্দ ও জটিল বাক্য গঠন ব্যবহার করা হয়। শব্দচয়ন ও বাক্য গঠন অপেক্ষাকৃত কঠিন ও অভিজাত হয়।

উদাহরণ:

  • সাধু গদ্য:
    “যে পর্বতে শান্তির নিদ্রা বিরাজমান, সেখানকার প্রকৃতি অনিন্দ্য সুন্দর।”

চলিত গদ্যরীতি:

এতে সাধারণত সহজ ভাষার শব্দ ও সরল বাক্য গঠন ব্যবহার করা হয়। এটি প্রায়শই কথ্য ভাষার মতো হয়।

উদাহরণ:

  • চলিত গদ্য:
    “যে পাহাড়ে শান্তি আছে, সেখানকার প্রকৃতি খুবই সুন্দর।”

৩. শব্দের প্রভাব ও ছন্দ

সাধু গদ্যরীতি:
এতে শব্দের ঐতিহ্য ও শাস্ত্রীয় প্রভাব থাকে। কিছু বিশেষণ, ক্রিয়া এবং নাম সাধারণত প্রাচীন সংস্কৃতির প্রভাব বহন করে।

উদাহরণ:

  • সাধু গদ্য:
    “নীরবতা ও শান্তির এই পরম আদর্শের স্বপ্ন, চিরকাল যেন অমলিন থাকে।”

চলিত গদ্যরীতি:


এতে আধুনিক ও সাধারণ শব্দ ব্যবহার করা হয়। ছন্দ ও শব্দের প্রভাব সাধারণত কম হয়।

উদাহরণ:

  • চলিত গদ্য:
    “নীরবতা আর শান্তির এই স্বপ্ন, যেন চিরকাল ভালো থাকে।”

৪. ব্যাকরণ ও শৈলী

সাধু গদ্যরীতি:
এই শৈলীতে গ্রামার, ভাষা ও শৈলীর কঠোর নিয়ম মেনে চলা হয়। এটি সাধারণত ধর্মীয়, সাহিত্যের বা ঐতিহাসিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।

উদাহরণ:

  • সাধু গদ্য:
    “আপনার প্রেম ও করুণার অমিয়া ধারায়, আমরা নতুন জীবন পাই।”

চলিত গদ্যরীতি:


চলিত ভাষায় গ্রামার ও শৈলীর নিয়ম তুলনামূলকভাবে নমনীয় এবং প্রায়শই প্রাকৃতিক কথোপকথন অনুযায়ী হয়।

উদাহরণ:

  • চলিত গদ্য:
    “আপনার প্রেম আর দয়া দিয়ে আমরা নতুন জীবন শুরু করি।”

সংক্ষেপে:

  • সাধু গদ্যরীতি: ভাষার শুদ্ধতা, উচ্চাঙ্গ শব্দ ও বাক্য গঠন, সংস্কৃত প্রভাব।
  • চলিত গদ্যরীতি: সহজ ভাষা, প্রাকৃতিক কথোপকথন, আধুনিক রূপ।

এই পার্থক্যগুলি বাংলা ভাষার বৈচিত্র্য ও সাহিত্যিক সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলে।

আরো পড়ুন

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রবর্তিত বানান-বিধির পরিচয় দাও।

পরিভাষাচর্চার প্রয়োজনীয়তা লেখো।

উদাহরণসহ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রবর্তিত বানান-বিধির উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলি লেখো।

পরিভাষা লেখোঃ (যে-কোনো ছ’টি)

বাংলা উচ্চারণ-বিধির সমস্যা সংক্ষেপে আলোচনা করো।

বাংলা শব্দভাণ্ডার বিষয়ে আলোচনা করো।বাংলা শব্দভাণ্ডারের বৈশিষ্ট্য

বিসর্গ (ঃ) চিহ্নের ব্যবহার দেখিয়ে তিনটি শব্দ লেখো।

পরিভাষা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

হাইফেন চিহ্ন, সেমিকোলন এবং ড্যাস চিহ্নের ব্যবহার দেখিয়ে একটি করে বাক্যে এগুলির প্রয়োগ দেখাও।

অর্ধতৎসম শব্দ কাকে বলে? উদাহরণ দাও। অর্ধতৎসম শব্দের বৈশিষ্ট্য

বাংলা বাক্যে কমা (,) কখন ব্যবহৃত হয় তা উদাহরণ সহযোগে দেখাও।

গত্ব-বিধান কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

‘কি’ এবং ‘কী’ কখন ব্যবহার হয় তা উদাহরণসহ লেখো।

বাংলা শব্দভাণ্ডারের অন্তর্গত চারটি আগন্তুক শব্দের উদাহরণ দাও।

উদাহরণসহ সাধু ও চলিত গদ্যরীতির পার্থক্য আলোচনা করো।

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading