উপসর্গ কাকে বলে?
উপসর্গ হলো এমন শব্দাংশ, যা কোনো শব্দ বা ধাতুর আগে যুক্ত হয়ে তার অর্থ পরিবর্তন বা বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। এটি স্বতন্ত্রভাবে কোনো অর্থ প্রকাশ করে না।
উদাহরণ: “নীল” শব্দের সঙ্গে “অ-” উপসর্গ যোগ করলে হয় “অনীল” (যার রং নেই)।
উপসর্গের ভূমিকা ও অর্থ পরিবর্তন
উপসর্গ যোগ করার মাধ্যমে শব্দ বা ধাতুর অর্থে পরিবর্তন, সম্প্রসারণ বা সংক্ষিপ্তি ঘটে। নিচে এর কার্যকারিতা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করা হলো:
১. অর্থের বিপরীত তৈরি
- অ–: “সুখ” → “অসুখ” (বিপরীত অর্থ)।
- নি–: “গুণ” → “নিগুণ” (গুণহীন)।
২. নতুন গুণ বা বৈশিষ্ট্য সংযোজন
- সু–: “বন্ধু” → “সুবন্ধু” (ভালো বন্ধু)।
- অতি–: “শীত” → “অতিশীত” (অধিক শীত)।
৩. অবস্থা বা সময় নির্দেশ করা
- উৎ–: “পন্ন” → “উৎপন্ন” (জন্মানো)।
- প্রতি–: “দিন” → “প্রতিদিন” (প্রতিবার)।
৪. বিশেষ কার্য বোঝানো
- আ–: “গত” → “আগত” (আগে আসা)।
- সম্–: “যোগ” → “সম্মিলন” (একত্রিত হওয়া)।
৫. নিন্দাসূচক অর্থ প্রকাশ
- কু–: “কর্ম” → “কুকর্ম” (খারাপ কাজ)।
- অপ–: “কীর্তি” → “অপকীর্তি” (নিন্দনীয় কাজ)।
উপসর্গের প্রকারভেদ
১. তৎসম উপসর্গ: সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত।
- উদাহরণ: অ-, সু-, কু-, প্রতি।
২. দেশি উপসর্গ: বাংলা ভাষার নিজস্ব উপসর্গ।
- উদাহরণ: আ-, উ-, নির।
উপসংহার
উপসর্গ শব্দের অর্থ ও প্রয়োগে নতুন মাত্রা যোগ করে। এটি ভাষাকে সমৃদ্ধ করে এবং অর্থ প্রকাশে বৈচিত্র্য আনে। সঠিকভাবে উপসর্গ ব্যবহারে শব্দের তাৎপর্য আরও স্পষ্ট হয়।