ক্রিয়া কাকে বলে?
ক্রিয়া হলো বাক্যের এমন একটি পদ যা কোনো কাজ করা, হওয়া বা থাকা বোঝায়। এটি বাক্যে কর্ম বা অবস্থার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। উদাহরণ: “রবি বই পড়ে।” এখানে “পড়ে” শব্দটি ক্রিয়া।
ক্রিয়ার প্রকারভেদ
ক্রিয়া প্রধানত তিন প্রকার। নিচে প্রকারভেদ ও উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো:
১. কর্মফলসূচক ক্রিয়া (Transitive Verb):
যে ক্রিয়ার কাজ কোনো কর্ম বা বস্তুতে এসে শেষ হয়, তাকে কর্মফলসূচক ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “সে গান গায়।” (গান—কর্ম)।
- বৈশিষ্ট্য: এই ক্রিয়াগুলির সাথে “কি” প্রশ্ন করা যায়। যেমন: “সে কী গায়?”
২. অ–কর্মফলসূচক ক্রিয়া (Intransitive Verb):
যে ক্রিয়ার কাজ কোনো কর্ম বা বস্তুতে এসে শেষ হয় না, বরং ক্রিয়াকর্তার সঙ্গেই থেকে যায়, তাকে অ-কর্মফলসূচক ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “পাখি উড়ে।”
- বৈশিষ্ট্য: এর সঙ্গে “কী” প্রশ্ন করলে অর্থ সম্পূর্ণ হয় না।
৩. দ্বিকর্মক ক্রিয়া (Ditransitive Verb):
যে ক্রিয়া দুটি কর্ম বা বস্তু বোঝায়, তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “সে আমাকে বই দিল।” (আমি—প্রত্যক্ষ, বই—পরোক্ষ)।
- বৈশিষ্ট্য: এই ক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় বস্তু থাকে।
ক্রিয়ার অন্যান্য শ্রেণীবিভাগ
ক. কার্যাভিসন্ধিক ক্রিয়া (Finite Verb):
যে ক্রিয়া বিষয় এবং কাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়, তাকে কার্যাভিসন্ধিক ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “সে বাজারে যাবে।”
খ. অকর্মব্য ক্রিয়া (Non-finite Verb):
যে ক্রিয়া বিষয় এবং কাল অনুযায়ী পরিবর্তিত হয় না, তাকে অকর্মব্য ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “সে বই পড়তে ভালোবাসে।”
গ. সহায়ক ক্রিয়া (Auxiliary Verb):
যে ক্রিয়া প্রধান ক্রিয়াকে সাহায্য করে, তাকে সহায়ক ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “সে পড়ছে।”
ঘ. যৌগিক ক্রিয়া (Compound Verb):
দুই বা ততোধিক শব্দ মিলে একটি কাজ বোঝালে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “সে পড়ে গেল।”
ঙ. মিশ্র ক্রিয়া (Phrasal Verb):
যে ক্রিয়ার সঙ্গে একটি অব্যয় যুক্ত হয়ে আলাদা অর্থ প্রকাশ করে, তাকে মিশ্র ক্রিয়া বলে।
- উদাহরণ: “সে উঠে পড়ল।”
উপসংহার
ক্রিয়া বাক্যের প্রাণ। এটি বাক্যের অর্থ ও গতিশীলতা বাড়ায়। বাংলা ভাষায় ক্রিয়ার বিভিন্ন প্রকারভেদ ভাষার সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য বাড়িয়েছে। সঠিকভাবে ক্রিয়া ব্যবহারে বাক্যের অর্থ স্পষ্ট হয় এবং যোগাযোগ সহজ হয়।