নাগরিকতা কাকে বলে ? নাগরিকতা অর্জনের পদ্ধতি গুলি সংক্ষেপে আলোচনা কর।

নাগরিকতা কী: –

 নাগরিকতা হল একটি রাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাস এবং স্থায়ীত্ব স্বীকৃত হয় যখন একজন ব্যক্তি নাগরিক হয়। অধ্যাপক লাস্কি বলেন “রাষ্ট্রের সকল স্থায়ী বাসিন্দা, যারা শুধু দায়িত্বশীলই নয়, সমাজে সব ধরনের ভালো অর্জনের জন্য সচেষ্ট তাদের নাগরিক বলা হয়।” যারা দেশে জন্মগ্রহণ করে তাদেরকে সে দেশের নাগরিক বলা হয়। অর্থাৎ স্বাভাবিক জন্মকে নাগরিক বলা হয়।

 নাগরিকতা অর্জনের পদ্ধতি :

নাগরিকতা অর্জনের ক্ষেত্রে দুটি পদ্ধতি আছে। যথা- 

1) জন্মসূত্রে নাগরিকতা,

2) আইনগত অনুমোদনের দ্বারা নাগরিকতা,

জন্মসূত্রে নাগরিকতা :

যারা স্বাভাবিক জন্মের দ্বারা নাগরিকতা লাভ করে সেইক্ষেত্রে জন্মসূত্রে নাগরিকতা অর্জন হয়। জন্মসূত্রে নাগরিকতাকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 

A) রক্তের সম্বন্ধযুক্ত নীতি। 

B) জন্মস্থান নীতি।

A) রক্তের সম্বন্ধযুক্ত নীতি : 

রক্তের সম্বন্ধ অনুসারে শিশু মা-বাবার নাগরিকতা অর্জন করবে। এই নীতি অনুযায়ী মা-বাবা যে রাষ্ট্রের নাগরিক তাদের সন্তান অন্য কোনো রাষ্ট্রে বা সেই রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করলেও সন্তানও সেই রাষ্ট্রের নাগরিক হবে।

উদাহরণ- ভারতীয় কোনো নাগরিকের সন্তান যদি আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করে সেই ক্ষেত্রে সেই সন্তানটি ভারতীয় হিসেবে গণ্য হবে। কারণ শিশুটির পিতা-মাতা ভারতের নাগরিক রক্তের সম্বন্ধ অনুসারে বিবেচিত হবে।

 B) জন্মস্থান নীতি : 

এই নীতি অনুসারে শিশু যেই দেশে জন্মগ্রহণ করবে সেই দেশের নাগরিকতা লাভ করবে।

উদাহরণ: কোনো দম্পতির দুই সন্তান একটি ভারতে ও অন্যটি জাপানে জন্মগ্রহণ করল তবে সেই ক্ষেত্রে এই দুটি সন্তান দুই দেশের নাগরিক হবে।

আইনগত অনুমোদনের দ্বারা নাগরিকতা :

এই পদ্ধতি অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যে রাষ্ট্রের নাগরিক নয় সেই রাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করে আর আবেদন মঞ্জুর হয় তবে সে সেই দেশের নাগরিক।

এই পদ্ধতিতে কতগুলি শর্ত প্রযোজ্য তা হলো :

A) বিবাহরীতির মাধ্যমে স্বামীর নাগরিকতা অর্জন। যেমন- কোনো মহিলার বিদেশ রাষ্ট্রে বিবাহের পর সেই মহিলা স্বামীর রাষ্ট্রের নাগরিকতা লাভ করেন।

B) বিদেশে চাকুরি করলে অস্থায়ী নাগরিকতা লাভ।

 C) বিদেশের সেনাবাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে নাগরিকতা লাভ।

স্থায়ী বাসিন্দা : –

যদি কোনো ব্যক্তি সেই দেশের স্থায়ী বাসিন্দা হতে চায় তবে তাকে কিছুকাল সেই দেশে থাকতে হবে।

 চরিত্রবান : –

নাগরিকতা অর্জনের জন্য সৎ চরিত্রের প্রমাণপত্র প্রদান করতে হবে।

 ভাষার ব্যবহার : 

যদি কোনো ব্যক্তি সেই দেশের অর্থাৎ যে দেশে নাগরিকতা লাভ করবে সেই দেশের সংবিধান স্বীকৃত যে কোনো একটি ভাষা জানতে হবে।

নাগরিকতা বিলাপের কারণগুলি : 

A) ব্যক্তির নাগরিকতা বিলাপের কারণসমূহ নিম্নরূপ প্রেক্ষাপটে আলোচনা করা হলো

B)  দীর্ঘকাল যাবৎ কোনো ব্যক্তি বিদেশে থাকলে তার নাগরিকতা লোপ হবে।

C) কোনো নারী যদি বিদেশে বিবাহ করে তবে সে নাগরিকতা হারাতে পারে।

 D) সেনাবাহিনীর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কাজ ছেড়ে পালিয়ে গেলে তার নাগরিকতা বিলোপ হবে।

উপসংহার : –

নাগরিকতা প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে জড়িত। অর্থাৎ রাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যক্তির সম্পর্ক জড়িত। ব্যক্তিকে স্থায়ী বসবাস করতে হলে কোনো না কোনো স্থানের নাগরিকতা অর্জন করতে হবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

bn_BDBengali
Powered by TranslatePress

Discover more from Online Learning

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading