ব্যাকরণে “পুরুষ” কথাটির অর্থ
ব্যাকরণে “পুরুষ” শব্দটি কোনো ক্রিয়া বা ধাতুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর সম্পর্ক বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত বাক্যের ক্রিয়াপদ বা পদসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কৃত্রিমভাবে চিহ্নিত সম্পর্কের নির্দেশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণভাবে, পুরুষ বলতে বলা হয় বাক্যে ক্রিয়াপদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা বাচন।
পুরুষের প্রকার
বাংলা ব্যাকরণে পুরুষ তিন প্রকারে ভাগ করা হয়:
- প্রথম পুরুষ (First Person)
- দ্বিতীয় পুরুষ (Second Person)
- তৃতীয় পুরুষ (Third Person)
১. প্রথম পুরুষ (First Person)
সংজ্ঞা: প্রথম পুরুষ হলো যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নিজে কথা বলছে। অর্থাৎ, যে বা যারা কথাটি বলছে, তাদেরই প্রথম পুরুষ বলা হয়।
উদাহরণ:
- “আমি বই পড়ছি।” (এখানে “আমি” প্রথম পুরুষ)
- “আমরা খেলব।” (এখানে “আমরা” প্রথম পুরুষ)
ব্যাখ্যা: প্রথম পুরুষের ব্যবহার সেক্ষেত্রে ঘটে যখন বক্তা নিজে নিজের কথা বা তাঁর দলের কথা বলছে। এটি একবচন বা বহুবচনে থাকতে পারে।
২. দ্বিতীয় পুরুষ (Second Person)
সংজ্ঞা: দ্বিতীয় পুরুষ হলো যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে কথাটি বলা হচ্ছে। অর্থাৎ, যাকে বা যাদের উদ্দেশ্য করে বক্তা কথা বলছে, তাদেরই দ্বিতীয় পুরুষ বলা হয়।
উদাহরণ:
- “তুমি বই পড়ো।” (এখানে “তুমি” দ্বিতীয় পুরুষ)
- “আপনারা খেলা শুরু করুন।” (এখানে “আপনারা” দ্বিতীয় পুরুষ)
ব্যাখ্যা: দ্বিতীয় পুরুষের ব্যবহার সেক্ষেত্রে ঘটে যখন বক্তা সরাসরি শ্রোতাদের উদ্দেশ্য করে কথা বলে। এটি একবচন বা বহুবচনে থাকতে পারে।
৩. তৃতীয় পুরুষ (Third Person)
সংজ্ঞা: তৃতীয় পুরুষ হলো যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সম্পর্কে বক্তা কথা বলছে, কিন্তু তাকে সরাসরি কথা বলা হচ্ছে না।
উদাহরণ:
- “সে স্কুলে গেছে।” (এখানে “সে” তৃতীয় পুরুষ)
- “তারা খেলতে যাচ্ছে।” (এখানে “তারা” তৃতীয় পুরুষ)
ব্যাখ্যা: তৃতীয় পুরুষের ব্যবহার সেক্ষেত্রে ঘটে যখন বক্তা অন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সম্পর্কে কথা বলছে, কিন্তু সরাসরি সে বা তারা সেই কথার শ্রোতা নয়।
উপসংহার
পুরুষের তিনটি প্রকার: প্রথম, দ্বিতীয়, এবং তৃতীয় পুরুষ, বাংলা ব্যাকরণের মৌলিক বিষয়। এগুলি বাক্যের ক্রিয়া বা কাজের সাথে সম্পর্কিত এবং বক্তা, শ্রোতা, বা তৃতীয় ব্যক্তির মাঝে সম্পর্ক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।