হর্ষবর্ধনকে ‘উত্তরাপথস্বামী’ বলা যায়–
হর্ষবর্ধন (৬২০–৬৪৭ খ্রিষ্টাব্দ) ভারতের ইতিহাসের এক মহান শাসক, যিনি গুপ্ত রাজবংশের পতনের পর উত্তর ভারতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার শাসনকাল ছিল একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পর্ব, যা ভারতীয় ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। হর্ষবর্ধন একাধারে একজন দক্ষ শাসক, সামরিক নেতা, সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষক এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতা প্রদর্শনকারী ছিলেন। তার শাসনের বৈশিষ্ট্য, বিশেষ করে ‘উত্তরাপথস্বামী’ বা ‘উত্তর ভারতীয় শাসক’ হিসেবে তার পরিচিতি, অনেক বিশ্লেষকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
এই প্রবন্ধে আমরা বিশ্লেষণ করবো, কেন হর্ষবর্ধনকে ‘উত্তরাপথস্বামী’ বলা যেতে পারে, এবং তার শাসনকাল, সামরিক কৌশল, প্রশাসনিক দক্ষতা, এবং রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে তিনি কীভাবে উত্তর ভারতের প্রধান শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।
১. হর্ষবর্ধনের উত্থান
হর্ষবর্ধনের জন্ম উত্তর ভারতে, শৈলতন জেলার (বর্তমান হরিয়ানা) মধ্যে ৬২০ খ্রিষ্টাব্দে, এবং তার পিতা প্রতিপালিত ছিলেন ‘বর্ধমান’ রাজ্যে। তার পিতা ছিলেন পশ্চিম উত্তর ভারতের রাজা, তবে তার বাচ্চা বয়সে পিতার মৃত্যু ঘটে। তখন তার বড় ভাই রাজ্য শাসক হন। কিন্তু, হর্ষবর্ধন ১৬ বছর বয়সে তার ভাইয়ের মৃত্যুতে উত্তরাধিকারী হিসেবে রাজ্যের শাসন নেন। এরপর মাত্র কিছু বছরেই তিনি নিজের শাসনকাল ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন।
২. ‘উত্তরাপথস্বামী’ হিসেবে পরিচিতি
উত্তরাপথস্বামী শব্দটি মূলত “উত্তর ভারতের শাসক” হিসেবে অভিহিত করতে ব্যবহৃত হয়, এবং হর্ষবর্ধন এই উপাধি ধারণ করেছিলেন কেননা তার রাজ্য বিস্তৃত ছিল ভারতবর্ষের উত্তরাঞ্চলীয় অঞ্চলে। যদিও তার শাসন পূর্বে এবং পরবর্তী সময়ে কিছু অন্যান্য রাজবংশ বা শাসকেরও একই ভূখণ্ডে শাসন ছিল, হর্ষবর্ধনই একমাত্র শাসক ছিলেন যিনি এক বৃহত্তর অংশে শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বিশেষ করে গঙ্গা ও যমুনা নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল এবং উত্তর ভারতে।
২.১. রাজ্য সম্প্রসারণ
হর্ষবর্ধন রাজ্য সম্প্রসারণে অদ্বিতীয় ছিলেন। তার শাসনকালে, তার রাজ্য উত্তর ভারতে বিস্তৃত ছিল, যার মধ্যে হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, এবং তার রাজ্য সীমা মঙ্গোলিয়া, মাটিয়া প্রদেশে আরও বিস্তৃত হয়েছিল। হর্ষবর্ধনের সামরিক অভিযানে, তার সাফল্য তার ক্ষমতার বিস্তার প্রমাণিত করে, যা তাকে ‘উত্তরাপথস্বামী’ বা ‘উত্তর ভারতের শাসক’ উপাধি পাওয়ার যোগ্য করে তোলে।
৩. হর্ষবর্ধনের সামরিক কৃতিত্ব
হর্ষবর্ধন ছিলেন একজন সাহসী ও কৌশলী সামরিক নেতা, যিনি উত্তর ভারতে রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিষ্ঠার জন্য একাধিক যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার সামরিক কৌশল এবং শাসনামল যুদ্ধের সাফল্য তার ‘উত্তরাপথস্বামী’ উপাধি পাওয়ার জন্য অন্যতম কারণ।
৩.১. শ্যামানন্দ বা গঙ্গারাজ যুদ্ধ
হর্ষবর্ধন, শাক্তি শক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং তার শাসনামলে হিন্দু ধর্মের অঙ্গীকারে ঐতিহাসিক শ্যামানন্দ যুদ্ধের অংশগ্রহণ ঘটে। তিনি দীর্ঘকাল ধরে বুদ্ধধর্মের অঙ্গীকার করে আসছিলেন, তবে গঙ্গারাজের সাথে চূড়ান্ত যুদ্ধের পর কেবল মাত্র একাধিক শক্তিশালী রাজ্যকে শাসন করতে সক্ষম হন।
৩.২. গুপ্তরাজ্য ও রাজ্য সম্প্রসারণ
হর্ষবর্ধন তার সামরিক কৌশল প্রয়োগে অগ্নিবাণের মত ছিলেন। হর্ষবর্ধনের ক্ষমতার বিস্তার শুরুর দিকে বঙ্গদেশের সাম্রাজ্যকে ছাড়িয়ে গঙ্গা ও যমুনার অঞ্চলে প্রসারিত হয়, যাকে উন্নতি বলা হয়।
৩.৩. গৌড়ে যুদ্ধ
এই সময় যুদ্ধের শাসন এক অপ্রতিদ্বন্দ্বিত রাজ্য। গৌড় রাজ্যের প্রাকৃতিক ইতিহাস